মাদারীপুরে ডিভোর্সি স্ত্রীকে পেতে শ্যালককে অপহরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৫৭ পিএম, ২৪ এপ্রিল,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০১ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪
প্রায় ৬ মাস আগে ডিভোর্স হওয়া স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্ত্রীর ফুফাতো ভাইকে শিবচর থেকে অপহরণ করে দুলাভাই। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ অপহরণের ৫ দিন পর কালকিনি থেকে শ্যালককে উদ্ধার করেছে।
এসময় আটককৃত ২ অপহরণকারী শুক্রবার মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অপরাধ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর আগে শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের সামাদ খার কান্দি গ্রামের কলম ঢালীর ভাগ্নি তাসলিমার সাথে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের খাসেরহাট গ্রামের মো: মজিবুর বেপারীর ছেলে মো: মিলন বেপারীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই মনোমালিন্য হতো। এরই প্রেক্ষিতে প্রায় ৬ মাস আগে মিলন বেপারীকে ডিভোর্স দেয় তাসলিমা। কিন্তু এটা মেনে নিতে পারেনি মিলন। স্ত্রীকে ফিরে পেতে তাই প্রায়ই মিলন ফোন করে তাসলিমাকে বিরক্ত করতো।
গত ১৭ই এপ্রিল বিকেলে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি পুরাতন ঘাটের গোলচত্বর এলাকায় তাসলিমার ফুফাতো ভাই নবীন ঢালীকে (২৭) পেয়ে কথা আছে বলে মিলন বেপারী, নয়ন সরদার, শাকিল ফকির, মাসুম সরদার ও ইব্রাহিম সরদার মোটরসাইকেলে করে নবীনকে কালকিনির খাসেরহাট এলাকায় নিয়ে একটি বাড়িতে আটকে রাখে।
এদিকে ছেলে নিখোঁজ হওয়ায় নবীনের বাবা কলম ঢালী ১৮ই এপ্রিল শিবচর থানায় একটি জিডি করেন। ১৯শে এপ্রিল সকালে মিলন বেপারী তাসলিমাকে মোবাইলে ফোন করে জানায়, নবীনকে সে অপহরণ করেছে। তাসলিমা তার কাছে ফিরে গেলে অথবা ৮ লাখ টাকা দিলে তবেই সে নবীনকে ছেড়ে দিবে।
তাসলিমার কাছে এ কথা শুনে কলম ঢালী পুলিশকে জানালে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নবীনকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে। ২২শে এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ কালকিনির আউলিয়ারচর গ্রাম থেকে অপহরণকারী নয়ন সরদার (২৫) ও শাকিল ফকিরকে (২২) গ্রেপ্তার করে।
তাদের দেওয়া তথ্যমতে নাগেরপাড় এলাকা থেকে নয়ন ঢালীকে উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার গ্রেপ্তার আসামীদের মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে বিচারকের নিকট অপহরণের অপরাধ স্বীকার করে আসামিরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
অপহরণের শিকার নয়ন ঢালী বলেন, আমাকে কথা আছে বলে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে কালকিনির একটি বাড়িতে আটকে রেখে মারধর করেছে। তাসলিমা ফিরে না গেলে আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখাতো।
তাসলিমা বলেন, মিলন খুব খারাপ মানুষ, তাই ওর সাথে আমার সংসার টিকেনি। আমি ডিভোর্স দেয়ার পরও আমাকে ফোন করে হুমকি দিতো। সর্বশেষ আমার ফুফাতো ভাইকে অপহরণ করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আমাকে ফিরে যেতে বলে নয়ত ৮ লাখ টাকা দাবি করে।
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিরাজুল ইসলাম বলেন, অপহরণের ঘটনায় বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।