যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে কৃষকের লিচুর বাগান দখলের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১০ এএম, ২২ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০৭ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নাটোরের গুরুদাসপুরে বৃদ্ধ কৃষকের সাড়ে ৬২ শতাংশ লিচুর বাগান শুধু ভয় দেখিয়ে পাঁচবছর ধরে জবর দখল করে খাচ্ছেন ভূমি খেকো এক যুবলীগ নেতা। প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন কৃষক আফতার খাঁ (৭২)। অধিকাংশ লোক আফতার খাঁর পক্ষে কথা বললেও ভয় ও ঝামেলা মনে করে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।
জানা যায়, উপজেলার মশিন্দা চরপাড়া গ্রামের মৃত জহির খাঁর ছেলে আফতার খাঁ চাঁচকৈড় খলিফাপাড়া গ্রামের মৃত মানু প্রামাণিকের দুই ছেলে আবুল কাশেম ও লেক মামুদের কাছ থেকে ১৯৭২ সালে মশিন্দা মৌজায় ওই সাড়ে ৬২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সেই জমিতে আফতার খাঁ ৪২টি লিচুর গাছ লাগিয়ে ৪৯ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। অথচ 'ঢাল তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার' এর মত একই গ্রামের মৃত রেক মামুদ ওরফে রেকাতের পুত্র মশিন্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দিন (৪০) পাঁচবছর আগে লিচুর গাছসহ ওই জমিটি দখল করে নেন। শুধু ক্ষমতার দাপট ও গোষ্ঠীগত বল দেখিয়ে নিরীহ ও স্বজ্জন নামে পরিচিত কৃষক আফতার খাঁর লিচু বাগান খাচ্ছেন তিনি।
সরেজমিন গেলে এলাকার অধিকাংশ মানুষ জানায়, লিচু বাগানটির প্রকৃত মালিক আফতার খাঁ। শুধু তাই নয়, আরএস ৪১৬ খতিয়ানের ২৭১৬ ও ২৭১৭ দাগের সাড়ে ৬২ শতাংশ জমি দলিল ও দখলমুলে ভোগদখল করছেন তিনি। এমনকি হালনাগাদ খাজনা খারিজ সবই আছে আফতার খাঁর নামে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের নালিশী লিখিত রায়ও প্রমাণ করে ওই লিচু বাগানের মালিক আফতার খাঁ।
জমির দলিল ও রেকর্ড সূত্রে জানা যায়, জমির মূল মালিক মৃত ঝুমুর প্রামাণিকের ছেলে মৃত আসান্দি প্রামাণিক। আসান্দির কাছ থেকে ০৭-০৩-১৯৬৩ইং সালে জমিটি ক্রয় করেন মৃত আজগর আলী। আজগর আলীর কাছ থেকে ১৪-১২-১৯৭০ইং সালে আবুল কাশেম ও লেক মামুদ জমিটি ক্রয় করেন এবং ০৪-০৩-১৯৭২ইং সালে তাদের কাছ থেকে ওই জমি ক্রয় করেন আফতার খাঁ।
জামাল উদ্দিন এ ব্যাপারে উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তবে তার দাবি, জমিটি তার মা সুখজানের অংশ। সুখজান উমির কাজীর নামে রেকর্ড সূত্রে অংশিদার।
কৃষক আফতার খাঁ অভিযোগ করে জানান, এলাকার কতিপয় লোকের প্রভাবে যুবলীগের তকমা গায়ে লাগিয়ে জামাল উদ্দিন জমিটি দখল করে আছেন। আর জমিটি ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার অধিকাংশ লোক তারপক্ষে কথা বললেও প্রকাশ্যে
মুখ খুলছেন না। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে শালিস দরবার হলে জামাল কৌশলে সময়ক্ষেপন করেন এবং বিভিন্নভাবে তা ভুন্ডুল করে দেন। তার দাপটের কাছে এলাকার মানুষ অসহায়। নিরবে নিভৃতে কাঁদে আফতার খাঁর বিচারের বানী।