রৌমারীতে বলাৎকারের অভিযোগে গণধোলাই!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪২ পিএম, ১২ এপ্রিল,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০১:১৮ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে আঙ্গ্রু হোসেন (৩৮) নামে এক শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। গতকাল রোববার ১১ এপ্রিল সকালের দিকে নটানপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় মাদ্রাসা কমিটির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন নির্যাতিত ওই শিশুর বাবা।
আজ সোমবার ঘটনাটি জানাজানি হলে উপজেলা কোর্ট মসজিদের ইমামতির দ্বায়িত্ব হতে মধ্য ইছাকুড়ি গ্রামের ছাইদুর মওলানা’র ছেলে আঙ্গুর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মসজিদ কমিটি। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কোর্ট মসজিদের সভাপতি আল ইমরান এবং নটানপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সফি আহমেদ।
নির্যাতিত ওই শিশু জানায়, প্রথমদিন হুজুর তাকে শরীর টিপে দেওয়ার কথা বলে এবং জোর করে তার পুরুষাঙ্গে হাত বুলিয়ে দিতে বলে। পরে তিনি নানা কৈশলে বলাৎকার করেন। বিষয়টি আমার অবিভাবকের কাছে জানাতে চাইলে টাকা পয়সা ও নানা ভয়-ভিতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বলেন। পরে আমি সহ্য না করতে পেরে আমার বাবাকে বলেছি।
নটানপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সফি আহমেদ বলেন, হুজুরকে গণধোলাই দেওয়া হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে গিয়ে দেখি বিক্ষুদ্ধ জনতা ওই হুজুরকে বেদম মারপিট করছেন। পরে আমি তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করি এবং নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীর মৌখিক জবান বন্দি শুনি। পরে স্থানীয়দের দাবি পূরণে ওই শিক্ষককে তাৎক্ষনিক মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
নির্যাতিত ওই শিশুর বাবা অভিযোগ করে বলেন, “ছেলেকে কুরআনের হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসায় পড়তে দিয়েছি কিন্তু বিকৃত ও কুরুচিপূর্ণ শিক্ষক আঙ্গুর হোসেন আমার ছেলের জীবনটা ধ্বংস করে দিলো। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।”
অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আঙ্গুর হোসেন বলাৎকারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হঠাৎ করেই একদল লোক এসে মাদ্রাসা থেকে আমাকে রাস্তায় ডেকে নিয়ে এলোপাতারীভাবে মারপিট করে। পরে মাদ্রাসার সভাপতি এসে আমাকে উদ্ধার করেন এবং তাদের কথার প্রেক্ষিতে আমাকে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করেন।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।