ফরিদপুরের সালথার সহিংসতা : পুলিশি অভিযানে পুরুষশূন্য বিভিন্ন গ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৩ এএম, ১০ এপ্রিল,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:১৯ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ফরিদপুরের সালথায় লকডাউন না মানা ও গুজব ছড়িয়ে তান্ডব চালানোর ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে। এদিকে পুলিশি অভিযানের মুখে উপজেলার আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রাম এখন পুরুশূন্য হয়ে পড়েছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে ওইসব এলাকার বাড়ি-ঘরগুলোতে নারী-শিশু ছাড়া আর কোনও পুরুষ সদস্যদের দেখা মেলেনি।
এদিকে হামলা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও লুটপাটসহ পরিচালিত তান্ডবের ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২৬১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৬ হাজার ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত৩৬ জনকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ফুকরা বাজার এলাকার করিমন বেগম বলেন, ‘সবসময় ভয়ে আছি। পুলিশ দেখতি দেখতি সারাদিন ক্যাটে যাচ্ছে। বাড়িতে কোনও বিটা মানুষ নাই। সবাই পলাই রইছে।’
নূরজাহান নামে অপর এক নারী দাবি করেন, ‘ওই দিন অন্য এলাকা থেকে লোকজন এসে হামলায় অংশ নিয়েছে। আমাদের গ্রামের কোনও লোক ছিল না।’
গট্টি এলাকার মনির নামে একজন জানান, বালিয়া গট্টি এলাকা ও উপজেলা কেন্দ্রিক এলাকার বাড়িগুলোতে এখন কোনও পুরুষ মানুষ নেই। ঘটনার পর থেকে ওই সব এলাকার লোকজন পলাতক অবস্থায় রয়েছে বলেও জানান তিনি। এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনা হলেও কোনও নিরীহ লোককে যেন হয়রানি না করা হয়, তার আহ্বান জানান তিনি।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মামলার আসামিদের ধরতে জোরদার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বেশির ভাগ এলাকা পুলিশি অভিযানের কারণে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। তারপরও পুলিশ দোষীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনায় যেই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। এ বিষয়ে কোনও ছাড়া দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। ঘটনা গুলিতে দুই জন নিহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, লকডাউন না মানাকে কেন্দ্র করে সোমবার (৫ এপ্রিল) বিকালে সালথার ফুকরা বাজারে এসিল্যান্ডের সঙ্গে থাকা সরকারি কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয়দের বাদানুবাদ হয়। পরে এ নিয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ এসে সালথা উপজেলা পরিষদ, এসিল্যান্ড অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পাশাপাশি লুটপাটেরও ঘটনা ঘটে।