কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছাত্রের মা-বোনকে কুপিয়েছে কলেজ শিক্ষক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৪৯ পিএম, ৭ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩৮ এএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সানোয়ার হোসেন (৩৫) নামের এক কলেজ শিক্ষক তার ছাত্রের মা ও বোনকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত সোমবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় ছাত্রের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেছেন আহত মহিলার স্বামী।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভেড়ামারা সরকারি মহিলা কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক সানোয়ার হোসেন(৩৫) ভেড়ামারা পৌরশহরের নওদাপাড়া এলাকায় দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রের বাসায় গিয়ে নিয়মিত প্রাইভেট পড়ান। এক পর্যায়ে তিনি ঐ ছাত্রের মাকে অনৈতিক কাজের জন্য প্রস্তাব দেন। গত সোমবার বেলা ৩টার দিকে আবার ঐ বাড়িতে গেলে এ নিয়ে সানোয়ারের সাথে ঐ গৃহবধূর কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে প্রভাষক সানোয়ার রান্নাঘর থেকে বটি নিয়ে ছাত্রের মাকে মাথায় ও পেটে আঘাত করেন।
মহিলার অনার্স পড়ুয়া মেয়ে এগিয়ে আসলে তাঁকেও আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে প্রভাষক সানোয়ারকে ধরে গাছের সাথে বেঁধে রেখে পুলিশকে খবর দেয়।
ভেড়ামারা থানা পুলিশের এসআই প্রকাশ রায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রভাষক সানোয়ারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
দুই সন্তানের জনক প্রভাষক সানোয়ার হোসেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নওদা বহলবাড়িয়া গ্রামের মোঃ ইদবার আলীর পুত্র। তিনিও ভেড়ামারার নওদাপাড়ায় সস্ত্রীক ভাড়া থাকতেন।
আহত গৃহবধুকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তাঁর মেয়েকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মহিলার শরীরে ৬২টি সেলাই দিয়েছেন বলে জানান তার স্বামী।
রাতেই উক্ত গৃহবধূর ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী বাদী হয়ে সানোয়ার হোসেনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০১। তারিখ ০৬/০৪/২০২১।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ্জালাল জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ গিয়ে প্রভাষক সানোয়ারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ভিকটিমদের পক্ষ থেকে সানোয়ার হোসেনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে সরেজমিনে এলাকাবাসী জানান, ঐ শিক্ষকের সাথে গৃহবধূর সম্পর্ক ছিল। শিক্ষকের স্ত্রী প্রতিবাদ করলে তাঁকে অত্যাচার ও মারধর করতেন। ইতিপূর্বেও এনিয়ে ঝামেলা হয়েছিল।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাঁদের সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু তাঁরা শুনতেন না। ভেড়ামারার স্বনামধন্য একটি কলেজের একজন শিক্ষক হয়ে এহেন জঘন্য কাজের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী।