বাগেরহাটে লকডাউনে গনপরিবহন বন্ধে ভোগান্তিতে সাধারন মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০২ পিএম, ৫ এপ্রিল,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০২:২৩ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২৪
করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এর মাঝেও প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে বাইরে যেতে হচ্ছে মানুষকে। যেতে হচ্ছে এক যায়গা থেকে অন্য যায়গায়। যে যেভাবে পারছে তার গন্তব্যে পৌছানোর চেষ্টা করছেন। তবে ভোগান্তিতে পড়ছেন শ্রমিক, কর্মজীবী মানুষ ও হতদরিদ্র দিনমজুররা।
আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে টার্মিনালের মধ্যে রাখা হয়েছে। কিন্তু রাস্তায় লোকজন রয়েছে। কেউ কেউ হেটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। কেউ আবার ভ্যানযোগে যাচ্ছেন। কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়ায় যাচ্ছেন বিকল্প পরিবহনে। কেউ কেউ নিরবে বসে স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। হাল ছেড়ে বসে রয়েছেন আবার কেউ।
এদিকে লকডাউনে বাগেরহাটে শহরের বেশিরভাগ দোকান বন্ধ রয়েছে। বন্ধ দোকানের সামনে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে স্থানীয়দের। কেউ খবরের কাগজ পড়ছেন, কেউ বা দিচ্ছেন আড্ডা। তবে লকডাউনের প্রথম দিনে বেশিরভাগ মানুষ-ই মাস্ক পরিহিত ছিলেন।
বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী ছাউনিতে বসা রাজশাহী থেকে আসা রাজমিস্ত্রি আবদুল করিম ও আনারুল বলেন, ১৫ দিন পূর্বে বাগেরহাটের সাইনবোর্ড এলাকায় আসছিলাম রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে। গতকাল কাজ শেষে ব্যাগ গুছিয়ে বাসস্ট্যান্ডের দিকে রওনা দিছি।
ঝড়ের মধ্যে পড়ে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডে পৌছাতে বেজে যায় রাত ১১টা। এসে দেখি কোন কোনো গাড়ি নেই, বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও নেই। সারারাত এই যাত্রী ছাউনিতেই বসে ছিলাম। ভোর থেকেই অপেক্ষা করছি যদি কোনো ব্যবস্থা হয় বাড়ি ফেরার। এরপরেও রিক্সায়, ভ্যানে, মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার চেষ্টা করলেও ভাড়া ৩ গুন হওয়ায় যেতে পারছি না, কি করবো।
কচুয়া উপজেলার রবিউল বলেন, খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে আমার বোন ভর্তি। সকালে বের হয়ে অনেক কষ্টে বাসস্ট্যান্ডে এসেছি। কিন্তু কোন পরিবহন নেই। কিভাবে যাব, পন্যবহনকারী ট্রাক ও পিকআপেও চেষ্টা করেছি। কিন্তু ব্যবস্থা হচ্ছে না। আসলে বিপদ আপদে যারা যাবে তাদের জন্য বিকল্প পরিবহনের ব্যবস্থার দাবি জানান তারা।
মোটরসাইকেলে চিতলমারী গামী রহমত আলী বলেন, সাধারণত ১‘শ থেকে দেড়‘শ টাকায় বাগেরহাট স্টান্ড থেকে মোটরসাইকের যোগে মোরেলগঞ্জে যাই। কিন্তু আজকে লকডাউনের কারণে মোটরসাইকেলের চাহিদা বেড়েছে। সাড়ে ৪‘শ টাকা ভাড়া দিয়ে যাচ্ছি মোরেলগঞ্জে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা কাজ করছি। কর্মহীন খেটে খাওয়া মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সে বিষয়টিকে সামনে রেখে খুব দ্রুতই আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সকল মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতন থাকার আহবান জানান তিনি।