ব্যবসায়ীসহ ৩ জনকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৩ এএম, ১৮ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৩৮ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ীসহ তিন জনকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও বগুড়ার পৃথক স্থানে এসব হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নুরুল ইসলাম (৩১) নামে এক যুবক নিহত হন। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাত ১১টার দিকে উপজেলার চাম্বল বাজারে এ ঘটনা ঘটে। বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত নুরুল ইসলামের বাড়ি পূর্ব চাম্বল এলাকায়। নুরুল ইসলাম স্থানীয় বাজারে মুরগির দোকান পরিচালনা করতেন। ওসি আজিজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, রাতে বাড়ি ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়। অপরাধীদের শনাক্তে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
বগুড়া প্রতিনিধি জানান, আদমদীঘিতে রুবেল হোসেন (২৮) নামে এক আউটসোর্সিং ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার পর তার মোটরসাইকেল নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার কুমারঘোপ এলাকায় আদমদীঘি-তিলকপুর সড়কে পাশে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। গতকাল বুধবার সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। রুবেল হোসেন আদমদীঘি উপজেলার শালগ্রামের শামসুল ইসলামে ছেলে। তিনি পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। সেখানে রুবেল স্পেয়ার পার্টস, ডিস ও আউটসোর্সিং ব্যবসা করতেন। তিনি বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখতে মাঝে মধ্যে শালগ্রামে আসতেন।
আদমদীঘি থানার ওসি জালাল উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের সময় চিনে ফেলায় দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। শিগগিরই হত্যা রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতার সম্ভব হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, বরুড়ায় ভাতিজাদের হাতে চাচা খুন এবং ভাতিজার আঘাতে চাচির মৃত্যুর পর এবার সোহেল আহমেদ পাটওয়ারী (৪০) নামের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। চলতি সপ্তাহে পর পর তিনটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় বরুড়া উপজেলার বাসিন্দাদের মাঝে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। নিহত সোহেল বরুড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ডাবুরিয়া গ্রামের মৃত জাফর আহমেদের ছেলে। সোহেল দুই সন্তানের পিতা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত সোহেল পার্শ্ববর্তী লাকসাম উপজেলার মুদাফরগঞ্জ বাজারে ভ্যারাইটিজ স্টোরের মালিক ছিলেন। তিনি বিকাশের টাকা লেনদেনের ব্যবসাও করতেন। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাতে সোহেল দোকান বন্ধ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা করে এবং এলোপাতাড়ি ছুরি ও চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার জানান, সোহেলকে কুপিয়ে হত্যায় জড়িত ঘাতকদের এখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। তবে তার পরিবার একটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বগুড়া প্রতিনি আরও জানান, ধুনটে দুর্বৃত্তরা জসিম উদ্দিন (২৮) নামে এক ফল ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে প্রায় এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গোসাইবাড়ি এলাকায় এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আহত ব্যবসায়ীকে জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, জসিম উদ্দিন ধুনট উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের মুছা শেখের ছেলে। তিনি গোসাইবাড়ি বাজার এলাকায় ফলের ব্যবসা করেন। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে গোসাইবাড়ি চৌধুরীপাড়ার শিমুলতলা এলাকায় পৌঁছালে ছিনতাইকারীরা তার পথরোধ করে। পরে ছিনতাইকারীরা জসিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাত করে সঙ্গে থাকা প্রায় লাখ খানেক টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। চিৎকার শুনে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাতেই শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আহত ব্যবসায়ীর চিকিৎসার খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।