কুমারখালীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে গ্রামীণ সড়ক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ১৫ মার্চ,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০২:২২ এএম, ১৩ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইজারা ছাড়াই কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী মহল।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই দিনরাত অবৈধ বালু উত্তোলন করে রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছে এই প্রভাবশালী মহল। এছাড়াও পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে সেলোইঞ্জিন চালিত অবৈধ যানবাহন (লাটাহাম্বা)।
যত্রতত্র অবৈধ যানগুলোর অতিরিক্ত বহন ও এলোমেলো চলাচলের কারনে রাস্তাঘাটসহ গ্রামীণ অবকাঠামো ভেঙে পড়ারাও অভিযোগ করেন তারা। জানা গেছে, কুমারখালী উপজেলার একটি রিমোর্ট এলাকা হিসেবে পরিচিত সাদিপুর ইউনিয়ন।
পদ্মা নদীর কারণে উপজেলা শহর থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দুরে ইউনিয়নটি। যাতায়াতের জন্য বর্ষায় ভরা নদীতে একমাত্র নৌকা আর শুকনো মৌসুমে পদ্মার বুকে জেগে ওঠা চরে ঘোড়ার গাড়ি, অটোগাড়ি, মোটরবাইক আর পা ই ভরসা।
সেই পদ্মায় জেগে ওঠা চরের দুইটি স্থান থেকে ভেকু দিয়ে প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক ডাম ট্রাক বালু উত্তোলন করেন চরসাদীপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বর জহুরুল, সাবেক মেম্বার সামছুল, জিলাল, রেজাই, চাঁদ ও আশরাফ মোল্লাসহ ১৫-২০ জন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও স্থানীয় প্রশাসনের ভুমিকা রয়েছেন নীবর। এবিষয়ে স্থানীয় কেউ বালু খেকোদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয় তাদের। আরো জানা গেছে, পাবনা থেকে কুষ্টিয়া যাতায়াতের জন্য খুব সল্প সময়ের রাস্তা হলো টেকনিক্যাল টু শিলাইদহ।
এ রাস্তার প্রায় প্রতিদিন ২০ হাজার লোকের চলাচল। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে বিকাল পর্যন্ত শিলাইদহ পদ্মা চর থেকে অবৈধ বালু কেটে পাবনা সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের কোমরপুর বাজারের উপর দিয়ে অতিরিক্ত বালি বোঝাই ডামট্রাকগুলো লঞ্চঘাট, বাংলাবাজার হয়ে টেকনিক্যাল মোড় দিয়ে পাবনার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে।
বালুবোঝাই ভারি ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের কারণে নদী তীরবর্তী গ্রামীণ মাটির সড়কগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লঞ্চঘাট, বাংলাবাজার টেকনিক্যাল রাস্তায় প্রায় সময়ই জানযটের সৃষ্টি হয়। এত দূভোগ পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রীদের।
এ বিষয়ে সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন মানিক মুঠোফোনে বলেন, বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন মেম্বর মিলে বালু তোলে। বিষয়টি প্রশাসন জানে। তিনি আরো বলেন, যেখানে প্রশাসন কিছু বলেনা, সেখানি আমি কিছু বলে বিপদে পড়ব!
এ বিষয়ে পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার রেইনার মুঠোফোনে বলেন, বালু উত্তোলনের ঘটনায় মাঝে মধ্যেই পদ্মা নদীতে মোবাইল কোর্ট করে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানা করা হয়। তবে সার্বক্ষণিক সেখানে বসে থাকাতো সম্ভব হয় না। আবারো অভিযান পরিচালনা করা হবে।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান মুঠোফোনে বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয় জানা নেই, তবে খোঁজ নিয়ে দেখে আইনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।