সানলাইফ ইন্সুরেন্স'র ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৭ পিএম, ১৩ মার্চ,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:০৭ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
গ্রাহকের ডিপোজিট আত্মাসাতের অভিযোগ এনে আদালতে করা মামলায় কুষ্টিয়ায় সানলাইফ ইন্সুরেন্স'র ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
গত বৃহষ্পতিবার ধার্যকৃত দিনে আদালতে হাজির না হওয়ায় কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক রেজাউল করীমের আদালত এই গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যুর আদেশ দেন।
বাদীর আইনজীবি এ্যাডভোকেট জয়দেব বিশ্বাস জানান কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার কিছু সংখ্যক মহিলা গ্রাহকের জমাকৃত টাকা নিয়ে প্রতারণার শিকার হলে এই মামলার ঘটনা ঘটে।
তিনি জানান সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোং এর প্রতারণার শিকার বীমা গ্রাহক খোকসা উপজেলার বাসিন্দা আঞ্জুয়ারা খাতুন বাদি হয়ে কুষ্টিয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে এ মামলা করেন্ ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি।
এজাহার নামীয় যে সব আসামীর বিরুদ্ধে গেফতারী পরোয়ানার আদেশ দিয়েছেন আদালত, তারা হলেন ঢাকা বনানী এলাকার ১৫নং কামাল আতাতুর্ক সড়কস্থ' বিটিএ টাওয়ারের সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোং'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শরিফুল ইসলাম, কুষ্টিয়া শহরের লাভলী টাওয়ারের ৯ম তলার সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোং গণবীমা প্রকল্প শাখার এ এমডি মো: ওলি উল্ল্যা, এএমডি আনিসুর রহমান এবং খোকসার তেবাড়িয়া শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আসমা খাতুন বেলী।
তবে এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন বীমা কোম্পানীর দুই কর্মকর্তা ওলি উল্ল্যা ও আনিসুর রহমান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের প্রথম দিকে খোকসা উপজেলার মোড়াগাছা গ্রামের বাসিন্দা ফরিদ মোল্ল্যার স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুন সানলাইফ ইন্সুরেন্সের বীমায় আকৃষ্ট হয়ে ১০বছর মেয়াদী বীমা গ্রাহক হন এবং তার আশপাশের আরও বেশ কিছু সংখ্যক প্রতিবেশীদেরও বীমা গ্রাহক হতে উৎসাহ দেন।
আঞ্জুয়ারা খাতুন শর্তানুযায়ী শুরু থেকে অভীষ্ট সময় পর্যন্ত নির্ধারিত জমাকৃত টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নির্দেশিত প্রক্রিয়ায় নিজ নিজ জমাকৃত টাকা উত্তোলনের আবেদন করেন ২০১৮ সালে।
কিন্তু বীমা কোম্পানীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নানা অজুহাত দেখিয়ে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে কর্মকর্তারা টাকা ফেরত দেয়া হবে না বলে হুমকি ধামকি ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নেয়ার পর থেকে একাধিক বার সন্ধিগ্ধ জড়িতদের আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজেদের ব্যাখ্যা তলবে সমন জারি করেন। কিন্তু তারা নিজেরা বা মনোনীত কোন আইনজীবীর মাধ্যমে তলবী ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন নাই।
এই প্রেক্ষিতে মামলার বাদি আদালতে আরজি করেন এজাহার নামীয় বীমা কোম্পানীর লোকদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা সহ নথিতে সংযুক্ত জমাকৃত সাড়ে ১২লক্ষ টাকা দাবি আদায়ের ব্যাবস্থা গ্রহণ করা।
উল্লেখ্য বীমা কোম্পানীর এধরণের প্রতারণা তথ্য প্রমানসহ এই মামলার নথিতে পৃথক পৃথক অন্তত অর্ধশত গ্রাহকের জমা রশিদ সংযুক্ত আছে যারা সবাই অভিন্ন প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন বলে জানান তাদের কৌশুলী।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে পরোয়ানা ভুক্ত আসামী সানলাইফ ইন্সুরেন্স কোং গণবীমা প্রকল্প শাখার এ এমডি মো: ওলি উল্ল্যা বলেন, আমি এখন ওখানে চাকরী করি না এবং আমার বিরুদ্ধে মামলা আছে তাও আমি জানি না।
তবে অপর এএমডি আনিসুর রহমানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, দেখুন আমাদের তো অনেকগুলি প্রজেক্ট আমি এমহুর্তে বলতেও পারছি না যে এই মামলাটি কোন প্রজেক্টের দাবিদাররা মামলাটি করেছেন এটা খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।
জানা গেছে কুষ্টিয়াতেই এই কম্পানির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। এ সংক্রান্ত একাধিক মামলা কুষ্টিয়ার কয়েকটি আদালতে বিচারধীন বলে জানান আরেক আইনজীবি সিরাজ প্রামানিক।