ময়মনসিংহে ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৪ এএম, ১৩ মার্চ,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:০৭ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ময়মনসিংহের গৌরীপুর বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন গ্রাহকরা। অবিলম্বে তারা ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া কদমতলী বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক। তিনি বলেন, যত ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করব, শুধু তার বিল দেব। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে মাতৃভূমি স্বাধীন করেছি। স্বাধীন দেশে বিদ্যুৎ বিভাগের আচরণ দেখে মনে হয়, আমরা এখনও পরাধীন। মনে হচ্ছে তারা যাই করবে, আমাদের তাই মেনে নিতে হবে। এটা হতে দেয়া হবে না। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মো. হাসিম উদ্দিন, মো. মফিজ উদ্দিন, ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হযরত আলী, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কর, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, গৌরীপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন, ব্যবসায়ী মো. রইছ উদ্দিন প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে কোনাপাড়া গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে মো. হেলাল উদ্দিন জানান, তিনি একজন মুদি দোকানি। তার নভেম্বর মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৩২৭ টাকা। তিনি আরও জানান, অক্টোবর মাসেও বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৮ হাজার ১১৪ টাকা ইউনিট ছিল ১২,৯৬০। এক মাসে রিডিং ৯৩ হাজার ৮১৪ ইউনিট উঠে যায়। বিদ্যুৎ বিভাগে আবেদন করেও তিনি কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানান।
একই গ্রামের মৃত তালে হোসেনের ছেলে মো. হযরত আলী জানান, জানুয়ারি মাসে তার বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৩৭১ টাকা। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে বিল হয়েছে ১৩ হাজার ৬৪৭ টাকা।
একই গ্রামের গুজন আলীর ছেলে আব্দুল খালেক জানান, জানুয়ারি মাসে ১ হাজার ৬০৩ টাকা আর ফেব্রুয়ারি মাসে ১৮ হাজার ১০০ টাকা বিল এসেছে তার।
আফিস আলীর ছেলে মো. নবী হোসেন জানান, জানুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৩৯৩ টাকা। অথচ ফেব্রুয়ারি মাসে বিল হয়েছে ২৬ হাজার ৬০১ টাকা।
আরব আলীর ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, জানুয়ারি মাসে ৫৪৪ টাকা আর ফেব্রুয়ারি ৯ হাজার ২৭৯ টাকা বিল করা হয়েছে।
নিখিল চন্দ্র ধরের ছেলে নন্দন চন্দ্র ধর জানান, জানুয়ারি মাসে ১ হাজার ১৪৩ টাকা ও ফেব্রুয়ারি মাসে বিল এসেছে ৫ হাজার ৫১২ টাকা।
জনু শেখের ছেলে রোমালী মন্ডল জানান, জানুয়ারি মাসে ৫৪৩ টাকা ও ফেব্রুয়ারি মাসে ৯ হাজার ২৭৯ টাকা বিদ্যুৎ বিল এসেছে।
মৃত কমির উদ্দিনের ছেলে আবুল কাসেম জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে তার বিদ্যুৎ বিল এসেছে ১৩ হাজার ৬৫ টাকা।
একই গ্রামের আবুল কালাম জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন মিটার না দেখেই ‘ভুতুড়ে’ বিল করছেন। তার মিটার রিডিং ১২ হাজার ১৫৫ ইউনিট, অথচ বিল করা হয়েছে ১৬ হাজার ২৩৫ ইউনিটের।
একই গ্রামের মৃত আনির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হেলিম একই অভিযোগ করে জানান, মিটার না দেখেই ফেব্রুয়ারি মাসে তার বিল করা হয়েছে ৯ হাজার টাকা।
এ প্রসঙ্গে গৌরীপুরের আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) নিরঞ্জন কুন্ডু বলেন, গ্রাহকদের অনুমোদনবিহীন কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য আইনের ৩৮ ধারায় এ জরিমানা করা হয়েছে। আবাসিক সংযোগ নিয়ে সেচ বা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের ঘটনায় তদন্তসাপেক্ষে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।