প্রযুক্তির আধুনিকতায় কুমিল্লায় বিলুপ্তির পথে লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০২ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৪৫ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪
কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র দেশের বর্তমান প্রযুক্তির কাছে হেরে গেলো গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য কৃষকের লাঙ্গল, গরু-মহিষ ও জোয়াল দিয়ে জমি চাষাবাদ।
জেলা দক্ষিনাঞ্চলের কৃষকদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের কৃষক কিংবা জমির মালিকদের জমি চাষাবাদে গ্রামীণ ঐতিহ্য একটি চিরায়ত পদ্ধতি ছিলো গরু, মহিষ, জোয়াল ও নাঙ্গল দিয়ে জমি চাষাবাদ। এক সময় এটি ছিলো কৃষকদের অনেক উপকারী এক পদ্ধতি।
কারন লাঙ্গলের ফলা কিংবা ঈশ জমির অনেক গভীর অংশ আলগা করে আনতো। গরু দিয়ে জমিতে কাঁদা সৃষ্টি এবং গরুর গোবর জমিতে জৈব সার হিসাবে ব্যবহার হতো। কিন্তু কালের আর্বতে বর্তমান প্রযুক্তির আধুনিকতায় হেরে গেছে গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্য চাষাবাদ পদ্ধতিটি।
সূত্রগুলো আরো জানায়, বর্তমান প্রযুক্তির আধুনিকায়নে কৃষি প্রযুক্তির কদর বাড়তে থাকায় এ অঞ্চলের সর্বত্র চিরচেনা লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ পদ্ধতিটি আজ অস্তিত্ব সংকটে।
এক সময় দেখা যেতো প্রতিনিয়ত কাঁক ডাকা ভোরে এলাকার কৃষকরা গরু ও কাঁধে লাঙ্গল- জোয়াল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে মাঠের জমিতে চাষাবাদ করতো। বর্তমানে বিজ্ঞানের নতুন নতুন কৃষি সরঞ্জাম আবিস্কারের ফলে এ অঞ্চলের কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন।
আর সেই পরিবর্তনের ছোয়া লেগেছে এ অঞ্চলের কৃষি বিপ্লবে। তাই প্রতিনিয়ত সকালে আর ওদের গরু, লাঙ্গল-জোয়াল নিয়ে মাঠে যেতে দেখা যায় না। প্রযুক্তি নির্ভর জমি চাষাবাদ সরঞ্জামগুলো নানা কারনে মাঠের সব জমিতে যেতে পারে না। ফলে অনেক জমিই চাষাবাদ ব্যাহত হয়ে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে।
স্থানীয় কৃষিবীদদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের কৃষি প্রধান এলাকাগুলো শতাব্দির পর শতাব্দির ঐতিহ্য ধরে রেখেছিলো কৃষকের গরু, লাঙ্গল-জোয়াল দিয়ে জমি চাষাবাদ। প্রযুক্তির ভারে গরু দিয়ে হালচাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলারসহ নানা রকম কৃষি সরঞ্জাম দিয়ে অল্প সময়ে জমি চাষ করা যায়।
এক সময় গরু- লাঙ্গল-জোয়াল দিয়ে জমি চাষাবাদকে পেশা হিসাবে নিয়ে কৃষকরা জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। আবার কেউ কেউ ধান, গম, ভুট্টা, তিল, সরিষা, কলাই ও আলুসহ বিভিন্ন পন্যের ফসল উৎপাদন ও মাড়ায় কাজে গরু, মহিষের বিকল্প কিছু ছিলো না।
বর্তমান প্রযুক্তি কাছে হেরে কৃষকরা এখন হালচাষ পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছে। ফলে যতই দিন আসছে ততই গরু দিয়ে হালচাষ এ অঞ্চল থেকে হারিয়ে যাছে।