রংপুরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস শীর্ষক আলোচনা সভা
বাংলাদেশে প্রথম বৈষম্যের শিকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান : ডা. জাহিদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪০ পিএম, ১৪ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৪:০০ এএম, ১৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, দেশ স্বাধীনে পরে বাংলাদেশে বৈষম্যের শিকার হন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। নিজের দুই নাবালক সন্তানের কথা ও সহধর্মীনির কথা চিন্তা না করে, শুধুমাত্র দেশের কথা চিন্তা করে একজন মেজর হয়ে শহীদ জিয়া চট্রগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুধু ঘোষণা দিয়ে বসে থাকেননি। তিনি নিজে যুদ্ধ করেছেন। শহীদ জিয়া যখন ঘোষণা করেন, তখন তিনি সিনিয়র মেজর ছিলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর একটি দিশাহীন জাতিকে দিশার জন্য সিপাহী ও জনতা মিলে শহীদ জিয়াকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন, উনি নিজে অধিষ্টিত হন নাই। বিএনপি মানেই জনগণ। শহীদ জিয়ার বক্তব্য ছিলো জনগনই সকল শক্তির উৎস। ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। এজন্যই বিএনপি জনগনের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। ৫ আগস্টের তিনদিন আগে এক নেত্রী বলেছিলো অমুকের বেটি কখনও পালায় না। অথচ তিনদিন পরেই ঘটলো উল্টোটা। তাই বলতে হবে ,আমরা অসীম না, আল্লাহ তায়ালা অসীম। আমরা ক্ষমতাশালী না, ক্ষমতাশালী হলো জনগণ। তাই জনগণকে সামনে রেখে জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যক্ষ সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবীব দুলু, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, এবং অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মুখ্য আলোচক ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সমাজ ও রাজনীতি বিশ্লেষক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, বক্তব্য রাখেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো.সাইফুল ইসলাম। সভাটি সঞ্চালনা করেন, রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. আনিছুর রহমান লাকু এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন।
ডা. জাহিদ বলেন, দেশে ঐক্যের বিকল্প নাই। ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ঐতিহাসিক সিপাহি ও জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করেছিলেন। যেখানে ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ, সর্বপরি মানুষের বাক স্বাধীনতা। মানুষের বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে। সে বিজয়কে ধরে রাখতে হলে ঐক্যের কোন বিকল্প নাই। আমরা চাই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সকল দলমতের সবাই এগিয়ে আসুক। ঐক্য গড়ে উঠুক। কারণ ঐক্য ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেয়ার বিকল্প নেই।
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংস্কার সবসময় চলমান প্রক্রিয়া। এক প্রজন্ম থেকে সামনের প্রজন্ম সব প্রজন্মের আলাদা চাহিদা থাকে। তাই জনগণের চাহিদাই সংস্কারের শর্তপুরণ। জনগণকে সাথে নিয়ে সংস্কার করতে হয়। এজন্যই আমাদের দেশনায়ক তারেক জিয়া ৩১ দফা দিয়েছেন। আমরা সেই ৩১ দফা নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি। জনগণকে বুঝাচ্ছে, জনগণ আগামীর কেমন বাংলাদেশ চায়। বিএনপির উদ্দেশ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, মানবধিকার প্রতিষ্ঠা করা। মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে, অন্যায়ের বিচার বাংলাদেশের মাটিতেই করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই অনেক ধরনের কথা বলবেন, তবে আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলি, ১৯৪৭ না হলে ১৯৭১ হতো না, এবং ১৯৯০ না হলে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টও সম্ভব হতো না। অতীতের শিক্ষা আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে, তবে অতীতকে ভুলে গেলে আবারও সেই অবস্থায় ফিরে যেতে হতে পারে। এসময় রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগি দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দিনকাল/এসএস