লাকসামে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগে মানুষের আস্থা বাড়াতে ব্যস্ত চিকিৎসকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৭ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৫ পিএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
কুমিল্লার লাকসাম পৌরশহর এলাকায় শুরু না হলেও উপজেলার সর্বত্র করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগে এ অঞ্চলের সাধারন মানুষের আস্থা বাড়াতে নানাহ কৌশলে উদ্যোগ নিয়ে গত কয়েকদিন যাবত ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলা প্রশাসনসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ উপজেলায় প্রথম দফায় ৭ হাজার ৪’শত করোনা ভ্যাকসিন এসেছে যা এলাকার জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল্য।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক সূত্র জানায়, প্রথম দফায় ৭ হাজার ৪’শত করোনা ভ্যাকসিন ডোজ এ উপজেলায় আসলে সরকারি হাসপাতাল ইনচার্জ ডাঃ আবদুল আলী এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন প্রয়োগে নিতে ইচ্ছুক ব্যাক্তিদের রেজিষ্ট্রেশন করতে আহবান জানিয়েছেন। এতে বিগত ৩ দিনে প্রায় ৬’শ৫০জন রেজিঃ করেছেন এবং ২ দিনে ১’শ৫০ জন করোনা ভ্যাকসিন নানাহ ব্যাক্তিদের শরিরে প্রয়োগ করেছেন। এছাড়া টিকাকেন্দ্র উদ্বোধনের দিনে এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের ভয় কাটাতে প্রথমে একাধিক চিকিৎসক, সরকরি কর্মকর্তা ও এলাকার শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ করোনা ভ্যাকসিন তাদের শরীরে প্রয়োগ নিয়েছেন। আন্তজার্তিক দাতা সংস্থা জাইকা, উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন এনজিওসহ সরকারি-বেসরকারি সংগঠন করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় গত ৫ দিন ধরে সকল শ্রেণি পেশার মানুষদের নিয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালাসহ নানাহ উদ্যোগ নিয়ে মানুষের আস্থা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের একাধিক সূত্র জানায়, সম্প্রতি এ উপজেলায় করোনা ভাইরাস টিকা আসায় করোনা সু-রক্ষা পন্য মাক্স ব্যবহারে কারোই যেন আগ্রহ নেই। পৌরশহর এলাকার চাইতে গ্রামাঞ্চলে মাক্স ব্যবহার না করার প্রবনতা অনেকইটা বেশি। দেশজুড়ে বহু প্রতিক্ষিত করোনা ভাইরাস টিকাদান কর্মসুচী গত রবিবার থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে শুরু হলেও এ অঞ্চলে তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যে অনীহাভাব প্রকাশ পাচ্ছে। শীতের শুরুতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বাড়তে থাকায় সরকার ঘরের বাইরে মাক্স ব্যবহার বাধ্যতামূলক করলেও শীতের শেষে এসে এখন আর কেউ তা মানছে না। স্থানীয় প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান এ নিয়ে শুরুতে তৎপর থাকলেও তারা এখন অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসক বোর্ডর একাধিক সদস্য জানায়, বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ হাজার ৫০ থেকে ৩’শ প্রকারেরও বেশি মারাত্মক ও ভয়ংকর রোগ রয়েছে। প্রত্যোক রোগেই আলাদা আলাদা এবং ওই রোগের চিকিৎসা প্রদ্ধতিও আলাদা। বর্তমানে ভংয়কর মহামারী করোনা ভাইরাস নিয়ে সরকারি-বেসরকারি ভাবে প্রচুর গবেষনা হচ্ছে এবং নানাহ বেসরকারি সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে নতুন নতুন চমকানো ভয়ংকর অনেক তথ্য বের হয়ে আসছে। বিশেষ করে করোনা ভাইরাস নামটা বর্তমানে সকল শ্রেনি পেশার মানুষের মাঝে ভংয়কর সৃষ্টিকারী রোগ এ ভয়াবতা সম্পর্কে আমাদের পূর্বের কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও চলমান সময়ে এ অঞ্চলের একাধিক বন্ধু কিংবা স্বজনদের মধ্যে কেউ কেউ এ মরনব্যাধি করোনা ভাইরাস ভয়ংকর রোগে আক্রান্ত এবং জীবনদান করেনি সমাজে এমন লোক কিন্তু পাওয়া যাবে না। নানান সময় নানাহ রোগের প্রকোপ কিংবা কোন না কোন ক্ষেত্রে অস্থিরতা সমাজ জীবনে সাময়িক ভাবে আসে। আবার চলেও যায়। বহু জীবন ধ্বংস কিংবা সামাজিক অস্তিত্বকে অস্থির করে। ভিধ্বংসী এ রোগ করোনা ভাইরাস বিগত ৯/১০ মাস ধরে আমাদের সার্বিক ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থের দিকে নিয়ে গেছে কিন্তু সেও একদিন চলে যাবে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, আমরা আমাদের দেশে অদৃশ্য ভাইরাস করোনা মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের টিকা-ভ্যাকসিন ও সুরক্ষা সরঞ্জামের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে চাই না। আমাদের দেশে অনেকগুলো বড় বড় ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মহামারী করোনার ভ্যাকসিন আমাদের দেশে নিজের প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎপাদন করতে পারি এবং নিজ দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ব বাজারে রপ্তানি করে আমরা সারা দুনিয়া দখলে নিতে পারি কারন আমরা বীরের জাতি। সে প্রত্যাশায় দেশের ১৮ কোটি মানুষের। অপরদিকে মহামারী করোনার প্রকোপে আতংকে এ এলাকার মানুষগুলো। তারপর স্বাস্থ্য দপ্তরের নিয়মনীতি উপেক্ষা করোনাকালে সুষ্ঠ্য নীতিমালা ও সম উপযোগী নানান আইন-কানুন না মেনেই চলছে এ এলাকার প্রায় ৪০/৪৫টি বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য ক্লিনিক। ১৯৮২ সালের স্বাস্থ্য আইন আনুযায়ী দন্ডবিধি ৩০৪ (ক) ধারা মতে মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা ওইসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা জর্নিত কারনে যদি কারো মৃত্যু হয় তবে ওই প্রতিষ্ঠানকে ৫ বছরের কারাদন্ড কিংবা জরিমানা অথবা দু’টোই এক সঙ্গে শাস্তি হিসাবে দেয়া যাবে। অথচ বিগত ৯/১০ মাস যাবত এ এলাকার ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো নিজেরা করোনা চিকিৎসা সেবা না দিয়ে রোগীদের বাহিরের হাসাপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও বর্তমান করোনা ভাইরাসের সার্বিক অবস্থা ও ভ্যাকসিন প্রয়োগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।