পটিয়ায় শ্রীমাই খালের মাটি লুট, জড়িত সরকারি দলের কর্মীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৪ পিএম, ২৬ জুন,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৫০ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বালুমহাল ইজারা নিয়ে চট্টগ্রামের পটিয়া শ্রীমতি খাল থেকে অবৈধভাবে বালু ও মাটি লুট চলছে। দিনরাত ২৪ ঘন্টা স্কেভেটর দিয়ে ২০ ফুট গভীর মাটি কাটার ফলে উপজেলার হাইদগাঁও, শ্রীমাই ও বাহুলী এবং পৌর এলাকায় খালের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। মনে হচ্ছে গভীর পুকুর খননের চলছে। সরকারি দলের প্রভাব খাটিয়ে ও স্থানীয়দের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু ও মাটি হরিলুট চলছে।
এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হুইপ এর ভাই মজিবুল হক চৌধুরী নবাব এলাকার লোকজনের অভিযোগ। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে দেখানো হয় বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি। অসহায় এলাকার শত শত কৃষকরা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতা চেয়েও প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ। সরকারি দলের কথিত নেতা কর্মীর এক সিন্ডিকেট গঠন করে বালু উক্তলন করা হচ্ছে। গত ৬/৭ বছরে বাহুলী, শ্রীমাই ও হাইদগাঁও মৌজা এলাকায় খালের দুই পাড়ের ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের বালুমহাল ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে প্রতিবারই স্কেভেটর দিয়ে খালের বালু ও মাটি লুট চলছে। বর্তমানে খালের বাহুলী ও হাইদগাঁও তুলাতুলি পয়েন্টে গভীর করে খালের মাটি কাটা চলছে। দেখে মনে হবে যেন পুকুর খনন করা হচ্ছে। ফলে কৃষকের ফসল ছাড়াও দক্ষিণ হাইদগাঁও গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রীমতি মন্দির, আশপাশের অসংখ্য বসতি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আগামী বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ী ঢলের পানিতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে কৃষক ও স্থানীয়রা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। দক্ষিণ হাইদগাঁও গ্রামের জাকারিয়া জকু জানিয়েছেন, প্রভাবশালী মহল প্রতি বাংলা সনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে বালুমহাল ইজারা নিয়ে শ্রীমাই খাল থেকে অবৈধভাবে মাটি লুট করে নিচ্ছে। খাল থেকে গভীর করে মাটি কাটার কারণে ইতোমধ্যে তার এক নিকট আত্মীয়র ৫০ শতক জমি বিলীন হয়েছে। ইদ্রিস সওদাগর, বাহাদুর চন্দ, অভি চন্দ, জ্ঞান চন্দ, গিরিশ চন্দন, বাবুল, এজাহার, বাদল, বেলাল,নজরুল, অসংখ্য মানুষের জমি শ্রীমাই খালে বিলীন। মাটি কাটা বন্ধ করা না গেলে আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে ভিটেবাড়ি হারিয়ে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়বে।
পটিয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরওয়ার উদ্দিন জানিয়েছেন, খালের ভাঙনে ইতোমধ্যে হাইদগাঁওসহ আশপাশের এলাকার অসংখ্য কৃষকের ফসলি জমি খালে বিলীন হয়েছে। তবে কারা মাটি কাটছে, তা আমি জানি না। এছাড়াও শ্রীমাই খালের বালু- মাটি উক্তলনে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার শংকায় রয়েছে। বিষয়টি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকার শত শত কৃষক।