আদমদীঘিতে ধনীরা ভূমিহীন সেজে খাস জমি লীজ নেওয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৭ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০০ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বগুড়ার আদমদীঘিতে ৬ ধনী ব্যক্তি ভূমিহীন সেজে ৩৪ শতক খাস জমি লীজ নিয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। বর্তমান বাজার মুল্য হিসাবে ওই জমির মুল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বলে এলাকাবাসীরা দাবী করেছেন। প্রকৃত ভুমিহীন ও গৃহহীনদের বাড়ি করার জন্য যখন খাস জমি খুজে পাচ্ছে না উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঠিক সেই সময় জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে ধনী ব্যক্তিদের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত জমি লীজ দেওয়া নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং মহল্লাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্ঠি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার চা-বাগান মহল্লার সান্তাহার মৌজার এমআরআর (এসএ) ৪৬ নং খতিয়ানের ২৩নং দাগে ৩৪ শতক পরিত্যক্ত জমির শ্রেনি ধানী। পক্ষান্তরে ২০০৯ সালে ছাপা হওয়া হাল বা আরএস রেকর্ডে জমিটি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। হাল খতিয়ানের ১৬১ ও ১৬২ দাগ ডোবা এবং ১৬৩ ও ১৬৪ দাগ ভিটা। কিন্তু সরেজমিন ২৪ শতক জমির শ্রেনি ডোবা। এই ডোবাটি গত মাসে ভরাট করা হয়েছে। ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী আব্দুল কুদ্দুস এবং প্যানেল মেয়র জার্জিস আলম রতন জানান, বর্ষা মৌসুমে চা-বাগান মহল্লার পানি নিস্কাশন হয়ে এই ডোবা জমিতে পড়ত। কিন্তু জেলা প্রশাসক দপ্তরের সার্ভেয়ার হাল রেকর্ডের তথ্য গোপন করে প্রতিবেদন দিয়েছে।
পক্ষান্তরে সার্ভেয়ার প্রদত্ত প্রতিবেদন যাচাই বাছাই না করে জেলা প্রশাসক দপ্তরের রাজস্ব শাখা কর্তৃক লীজ অনুমোদনের দুই বছর পর কেন লীজমানি দেওয়া হল সেটা নিয়ে প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। কাগজপত্র অনুসন্ধান করে জানা যায় ডোবা জমিকে ভিটা জমি দেখিয়ে ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর ৬ ব্যক্তির নামে আধাপাকা ঘর ও সীমানা প্রাচীর নির্মানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে লীজমানি প্রদান করা হয়েছে ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর। লীজ গ্রহীতারা হল (১) মোঃ আলমগীর খাঁন, পিতা আহম্মদ আলী, (২) মোছাঃ নাজমুন নাহার, স্বামী মোঃ মামুনুর রশীদ, (৩) মোঃ এনামুল হক, পিতা মোঃ আকবর আলী, (৪) মোঃ মিজানুর রহমান, পিতা মোঃ আকবর আলী, (৫) মোছাঃ আকতারুন নেছা, স্বামী কাজী আব্দুর রশীদ (৬) মোছাঃ জেসমিন পারভীন, স্বামী ওয়াসীম বারী।
এই লীজ গ্রহীতারা চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ডোবা জমিটি ভরাট করেন। এর পর তারা ঘরবাড়ি নির্মান করার জন্য পৌরসভায় আবেদনও করেছেন। এই ৬ জন সম্পর্কে ভাই-বোন, ভাবী ভগ্নিপতি। এরা চাকরিরত, অবসরপ্রাপ্ত, ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ীর স্ত্রী। প্রত্যেকের বাড়ি এবং জোতজমি রয়েছে। তাদের নামে খাস জমি লীজ দেওয়ার ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর, প্যানেল মেয়র এবং এলাকাবাসী বলেন, লীজ গ্রহীতারা কেউ ভুমিহীন নয়। তারা ওই লীজ বাতিল পুর্বক আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে প্রকৃত ভুমিহীন ও গৃহহীনদের দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন। এব্যপারে যোগাযোগ করা হলে সান্তাহার পৌর ভূমি কার্যালয়ের সহকারি ভুমি কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, হাল ফাইনাল রেকর্ডে ওই ৩৪ শতক জমি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমি প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন ছাড়া অন্য কাউকে লীজ দেওয়ার বিধান নেই।