রৌমারীতে অনিয়মের অভিযোগে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল

অনিয়মের অভিযোগ তুলে ৪ দফা দাবিতে রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ অধ্যক্ষ এইচ এম হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, ভাংচুর, রাস্তা অবরোধ ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই কলেজ ছাত্র-ছাত্রীরা।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ৩৬ জন শিক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে রৌমারী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী অত্র কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কলেজ থেকে মিছিল বের করে রৌমারী উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে জমায়েত হয়। পরে কলেজের  শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রনালয় বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) ২য় বর্ষের ৩৬জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তিন হাজার করে টাকা নিয়েও ফরম পূরন করেনি অধ্যক্ষ এইচএম হুমায়ুন কবীর। প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ৩৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আগামী ২ডিসেম্বর/২১ তারিখ এইচএসসি/সমমান পরীক্ষা শুরু হবে।

এইচএসসি ২য় বর্ষের পরীক্ষার্থী শাকিল, মিলন ও সুমাইয়া বলেন, অত্র কলেজের অধ্যক্ষ এইচ এম হুমায়ুন কবীর কাছে ফরম পূরণের জন্য তিন হাজার করে টাকা জমা দিয়েছি, কলেজে পরীক্ষা প্রবেশপত্রের জন্য গিয়ে দেখি আমাদের ৩৬জন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র নেই। বিষয়টি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি হলে আমরা সবাই  অধ্যক্ষের রুমে গেলে, তিনি কলেজ থেকে পালিয়ে যায়। অধ্যক্ষের মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় আমরা বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর অভিযোগ করি।

পরীক্ষার্থী হাফিজুর, সেলিম বলেন, এইচএসসি ১ম বর্ষের আমাদের ১৫৬জন শিক্ষার্থীকে ফেলের কথা বলে ১ হাজার দুইশত করে টাকা নিয়েছে। আমরা পরে জানতে পারি কেউ ফেল করেনি। আমরা ছয়শত শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত উপবৃত্তির টাকা পাইনি, উপবৃত্তির নাম দেওয়ার কথা বলে ১ হাজার করে টাকা সকল শিক্ষার্থীর কাছ নিয়েছে অধ্যক্ষ। আমাদের জীবনের বড় ধরনের ক্ষতি করল অধ্যক্ষ। তার গাফলতির কারনে আমরা পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।

নাম প্রকাশ না শর্তে অত্র কলেজের অনেক প্রভাষক বলেন, অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর শিক্ষার্থী কাছ থেকে উপবৃত্তি নাম দেওয়ার কথা বলে ১ হাজার করে টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীদের কাছে নেওয়া টাকা সে নিজেই আত্মসাত করেন। আমাদের কোন টাকা পয়সা প্রদান করে না, আমরা শুধু বেতন পাই।

এব্যাপারে রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ এইচ এম হুমায়ুন কবীরের সাথে কথা বলার জন্য কলেজ, ফোনকল ও তার বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান বলেন, রৌমারী টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবদুর রহমান বলেন, গতকাল ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফরম পূরনের সুযোগ ছিলো কিন্তু এখন আমাদের করার কিছুই নেই। কলেজের অধ্যক্ষ টাকা নিয়ে কেন ফরম পূরন করেনি তা আমার বোধগম্য নয়। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র না পেলে পরীক্ষার কোন সুযোগ নেই।