নাস্তায় ব্যয় ৩৩ হাজার, উত্তোলন দুই লাখ ৩৫ হাজার!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৩ এএম, ১৭ নভেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০২:০৬ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
যশোর সদর উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের কিশোর-কিশোরী ক্লাবের নাস্তার বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত দুই মাসের বরাদ্দের দুই লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে দুই লাখ ৩৫ হাজার ২০০ টাকা খরচ না করেই উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ক্লাব চালু থাকলেও বরাদ্দ দেরিতে আসায় তা পরে বণ্টন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় যশোর সদর উপজেলায় ১৬টি ক্লাব রয়েছে। ক্লাবগুলোতে সপ্তাহে দুদিন বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন করা হয়। প্রত্যেকটি ক্লাবে ৩৫ জন সদস্য হিসেবে প্রতি কার্যদিবসে ৩০ টাকা করে নাস্তা বরাদ্দ রয়েছে। এ হিসাবে প্রতি ক্লাবে সপ্তাহে (দুই কার্যদিবস হিসাবে) ক্লাবপ্রতি বরাদ্দ দুই হাজার ১০০ টাকা।
যশোর সদর উপজেলার ১৬টি ক্লাবে নাস্তা বাবদ প্রতি মাসে বরাদ্দ এক লাখ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলার ১৬টি ক্লাবের তিন মাসের নাস্তা বাবদ চার লাখ ৩ হাজার ২০০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এ বরাদ্দ ছিল দুই লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা।
অভিযোগ উঠেছে, গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রতিটি ক্লাবে ১৮টি ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও মাত্র দুটি ক্লাস হয়েছে। গত ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর ক্লাসগুলো অনুষ্ঠিত হয়। বাকি ক্লাস হয়নি। অথচ সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর পুরো মাসের দুই লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। অথচ দুই ক্লাসে ব্যয় করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৬০০ টাকা।
অভিযোগকারীদের দাবি, মহিলা বিষয়ক অধিদফতর যশোরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাসরিন আখতার সুলতানা ও ফিল্ড সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন বাকি টাকা উত্তোলন করেছেন।
কিশোর-কিশোরী ক্লাবে ক্লাস না হওয়ার ব্যাপারে জানতে বেশ কয়েকজন প্রশিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রশিক্ষক ক্লাস অনিয়মিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে এ বিষয়ে তারা বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে মহিলা বিষয়ক অধিদফতর যশোরের ফিল্ড সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন দাবি করেন, প্রতি সপ্তাহে দুদিন করেই কিশোর-কিশোরী ক্লাবের ক্লাস হয়েছে। যশোর সদরে ১৬টি ক্লাবের মধ্যে ১৫টি চালু ও একটি বন্ধ। ক্লাবের প্রত্যেক ক্লাসেই তাদের নাস্তা সরবরাহ করা হয়েছে। কোনো অনিয়মের ঘটনা ঘটেনি।
মহিলা বিষয়ক অধিদফতর যশোরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাসরিন আখতার সুলতানা বলেন, যখন কিশোর-কিশোরী ক্লাবে ক্লাস চালু রাখার নির্দেশনা আসে, তখন বরাদ্দ আসেনি। পরে বরাদ্দ এসেছে। ফলে দুদিনের নাস্তা একবারে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ক্লাস চালু রাখা ও নাস্তা বণ্টানের বিষয়টি ফিল্ড সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন দেখাশোনা করেন। তবে কোনো অনিয়মের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেন নাসরিন আখতার সুলতানা।