সিংগাইরে রাস্তার কাজের বিল না দেয়ার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৫ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১৮ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
রাস্তার কাজ করিয়ে বিল দিচ্ছে না মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিঠু। দেই দিচ্ছি বলে তালবাহানা করে প্রকল্প সভাপতি ভুক্তভোগী আসিয়া খাতুনকে হুমকি দামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৭,৮,ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার আসিয়া খাতুন।
জানা গেছে, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের স্থাবর সম্পতির হস্তান্তর ১ শতাংস খাতের আওতায় দক্ষিন জামশা সরকার নিবাস হতে জামশা ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাট ও প্যালাসাইডিং কাজের সভাপতি হিসেবে মহিলা মেম্বার আসিয়া খাতুনকে দায়িত্ব দেয় ইউপি চেয়ারম্যান। ওই রাস্তায় মাটি ভরাট ও ১১ টি প্যালাসাইডিং নির্মান করে মহিলা মেম্বার।
কাজ চলাকালীন সময় প্রকল্প সভাপতি মহিলা মেম্বারকে চার লাখ টাকা দেন ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিঠু। সেই চার লাখ টাকা থেকে সরকারী ভ্যাট উনিশ হাজার এবং চেয়ারম্যান সালামি বাবদ ৫৫ হাজার টাকা নেন। এরপর চেয়ারম্যান ওই কাজের বিল দিতে তালবাহানা শুরু করে। পরে কোন উপায় না পেয়ে প্রকল্প সভাপতি ভুক্তভোগী মহিলা মেম্বার সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরারবর লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করে নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্যেখ করা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিঠুর নির্দেশনায় মহিলা মেম্বার আসিয়া খাতুন এগারো শত ১৩ মিটার দৈর্ঘ্য রাস্তায় বাশেঁর প্যালাসাইডিং সহ রাস্তার দুই পাশে ভরাট করেছে।
এছাড়াও অতিরিক্ত ৫৭ গাড়ি মাটি ও ১৪ গাড়ী ইটের খোয়া ফেলানো হয়েছে। ২০১৯--২০ অর্থ বছরের ১ শতাংস তহবিল হতে ওই রাস্তার ৩৬০ মিটার কাজের বিল বাবদ দুই লাখ টাকা এবং ৫২.৭২ মিটার বাশেঁর বেড়া ও বস্তার চেগার নির্মাণ বাবদ দুই লাখসহ মোট চার লাখ টাকা দেয়া হয়েছে প্রকল্প সভাপতি আসিয়া খাতুনকে। ওই রাস্তার দৈর্ঘ্য প্রায় এগারো শত ১৩ মিটার যার মধ্যে ৩৬০ মিটার ও ৫২.৭০ মিটার প্যালাসাইডিং কাজের বিল দেয়া হয়েছে। বাকি ৭৫৩ মিটার রাস্তার কাজের বিল বকেয়া রয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে তদন্ত কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগী মহিলা মেম্বার আসিয়া খাতুন বলেন, চেয়ারম্যান অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে আমাকে জোর করে ওই রাস্তার সভাপতি করে কাজ করার দায়িত্ব দেন। আমি সহজ সরল মনে মেয়ের নিকট থেকে টাকা ধার করে এনে রাস্তার কাজ শেষ করেছি। কাজ চলাকালীন সময় চেয়ারম্যান আমাকে চার লাখ টাকা দেয়। এরপর কাজের বিল চাইতে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। রাস্তার কাজের বিল তো দিচ্ছেই না এমনকি এক বছর যাবত আমাকে পরিষদেও কোন সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে না এবং পরিষদে ডুকতে দেয়া হচ্ছে না। আমি ২৫ বছর যাবত এই ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।
এব্যাপারে জামশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিঠু বলেন, মহিলা মেম্বার যতটুকু রাস্তার কাজ করেছে ওই পরিমানে তার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। উনি আমার বিরুদ্ধে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছিল। তারপর তাকে আট লাখ টাকা দিয়েছি। ওই মহিলা মেম্বার একটা বাটপার, সে মেম্বারির কিছুই বুঝে না। বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ভাতার নামে টাকা নেন। আমি তাকে পরিষদে আসতে নিষেধ করিনি।
এবিষয়ে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, এব্যাপারে মহিলা মেম্বার লিখিত অভিযোগ করেছিল। যার প্রেক্ষিতে আমি সরেজমিন তদন্ত করতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। পরে চেয়ারম্যান বলেছে মহিলা মেম্বার সবটুকু কাজ করে নাই। তাই বিল পাবে না বলে জানান চেয়ারম্যান। কিন্তু মহিলা মেম্বারের দাবী তিনি ১৬ লাখ টাকার কাজ করেছে।