কলারোয়ায় একই পরিবারের ৪ খুন মামলার একমাত্র আসামীর মৃত্যুদন্ডের আদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৫ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:২০ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসী গ্রামের একই পরিবারের চারজনকে হত্যার দায়ে একমাত্র আসামি রায়হানুলকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এক জনাকীর্ণ আদালতে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের এই রায় ঘোষণা করেন।
পিনপতন নীরবতার মধ্যে আদালত চত্ত্বর জুড়ে এসময় ছিল কৌতুহলী মানুষের ভিড়। কাঠগড়ায় হাজির করানো হয় নিহত গৃহকর্তা শাহীনুর ইসলামের ভাই একমাত্র চার্জশীটভূক্ত আসামি রায়হানুলকে।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর গভীর রাতে কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসী গ্রামে একই পরিবারের চার জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়। এই হত্যার নির্মম শিকার হন গৃহকর্তা মোঃ শাহীনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানা (৮)। ঘাতক রায়হান শাহীনুর ইসলামের চার মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশু মারিয়া সুলতানাকে অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থলে রেখে যায়।
তদন্ত শেষে সিআইডি পুলিশ জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে নিহতদের প্রথমে ঠান্ডা পানিয়'র সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাওয়ানো হয়। গভীর রাতে ঘুমের মধ্যে তারা অচেতন হয়ে পড়লে ওই পরিবারের সদস্য রায়হানুল ইসলাম তার বড় ভাই, ভাবী ও তাদের দুই সন্তানের পা বেঁধে রেখে ধারালো কোপা দিয়ে জবাই করে হত্যা করে।
সিআইডি পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো কোপাটি নিকটস্থ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করেন। ঘটনার পরদিন ১৫ অক্টোবর সকালে নিহত শাহীনুরের ভাই রায়হানুলকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কলারোয়া থানায় নিহত সাবিনার মা ফাপুর গ্রামের ময়না খাতুন কলারোয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সিআইডির সাতক্ষীরা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, আটক রায়হানুল একাই ৪ জনকে জবাই করে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। আদালতে ১৬৪ ধারায়ও একাই হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন তিনি। এই মামলায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে চার্জশীট দেওয়া হয় একমাত্র আসামি রায়হানুলের বিরুদ্ধে।
মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। একজন সাফাই স্বাক্ষীও দিয়েছেন। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ। তিনি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
অপরদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাড. এসএম হায়দর। তিনি বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। উচ্চ আদালতে আপিল করবো। এদিকে, রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রায়হানুল চিৎকার করে বলতে থাকেন, আমি নির্দোষ, আমি ন্যায়বিচার পায়নি।