কুষ্টিয়ায় কমেছে নদীর পানি, বেড়েছে ভাঙ্গন! ভারি বর্ষনে কুষ্টিয়া পৌর এলাকার অনেকে রাস্তাঘাটে হাটুজল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৪ পিএম, ২৭ আগস্ট,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৪৫ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
চোখের সামনে ভেঙ্গে গেলো কুষ্টিয়ার শেখ রাসেল সেতুর পাদদেশে গড়াই নদীর কূলের ব্লক বাঁধ। এভাবে ভেঙে যাচ্ছে অথচ আমরা নির্বিকার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারনেই আজকের বেহাল দশা। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শম্পা মাহমুদ।
তিনি বলেন, হাটশ হরিপুর এলাকায় বাঁধের প্রায় ৪০ মিটার ব্লক গড়াই নদে বিলীন হয়েছে। ধসে পড়া বাঁধের পাশেই গ্রামের মানুষের বসতি। ব্লক ধসে পড়ায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় একটি বাড়ির কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। গেলো এক সপ্তাহে অন্তত বেশ কয়েকটি বাড়ীঘর ও একটি দোকান চলে যায় নদীগর্ভে। এখনও ঝুঁকিতে আছে বাড়িঘরগুলো। নদ তীরবর্তী বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্তাবধানে অন্তত ১ হাজার ৬০০ বস্তা ফেলা হয়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। হঠাৎ করে সেখানে পানির নিচ থেকে বুদ্বুদ উঠতে থাকে। একপর্যায়ে ব্লক বাঁধ ভাঙতে থাকে।
অপরদিকে, একদিনে কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে আরও ১০ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। আর পদ্মার প্রধান শাখা নদী গড়াইয়েও কমেছে ৯ সেন্টিমিটার পানি। পানি কমতে থাকায় এই দুই নদীর উপকূলে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, পদ্মায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে আগের দিনের চেয়ে আজ আরও ১০ সেন্টিমিটার কমে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৩ দশমিক ৯৫ মিটার উচ্চতায়। এখন বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গড়াই নদীতেও ৯ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমা ৪৯ সেন্টিমিটার নিচ নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে বন্যা পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, ২৮ আগস্ট থেকে কুষ্টিয়ায় পানি বাড়তে পারে। এদিকে দ্রুত পানি কমতে থাকায় পদ্মা ও গড়াইয়ে দুই নদীর উপকূলে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ভেড়ামারার রায়টাঘাট, মিরপুরের তালবাড়ীয়া, কুমারখালীর শিলাইদহ ও শাওতা গ্রাম, খোকসা শহর রক্ষা বাঁধ, শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতুর প্রতিরক্ষা বাঁধসহ ১২টি পয়েন্টে ভাঙনরোধে বালুর বস্তা ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে ইতিমধ্যেই অনেকের বাড়িঘর, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন অনেকে।
অন্যদিকে প্লাবিত হওয়া কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ৪০টি গ্রামের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। এখনও রামকৃষ্ণপুর, চিলমারি ইউনিয়নের ৪০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। প্রশাসনের উদ্যোগে এখানে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সেটি পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন সেখানকার বন্যা কবলিতরা।
কুষ্টিয়া হাটশ হরিপুর এলাকায় বাঁধের প্রায় ৪০ মিটার ব্লক গড়াই নদে বিলীন হয়েছে। ধসে পড়া বাঁধের পাশেই গ্রামের মানুষের বসতি। ব্লক ধসে পড়ায় একটি বাড়ির কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। এতে ঝুঁকিতে আছে বাড়িঘরগুলো। নদ তীরবর্তী বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্তাবধানে অন্তত ১ হাজার ৬০০ বস্তা ফেলা হয়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। হঠাৎ করে সেখানে পানির নিচ থেকে বুদ্বুদ উঠতে থাকে। একপর্যায়ে ব্লক বাঁধ ভাঙতে থাকে।
এ সময় তীরবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাকা দালানের বাসিন্দারা রাতের আঁধারের মধ্যে দ্রুত তাদের আসবাব অন্যত্র সরাতে শুরু করে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এক ঘণ্টায় ৩০ মিটার ব্লকবাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনো ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সেখানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এদিকে গত কালের দিনভর ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে কুষ্টিয়া পৌর সভার অনেক রাস্তাঘাট। কোথাও কোথাও হাটু পানি জমে চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।