ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের উদ্যোক্তার দুর্নীতি ও অনিয়মে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১০ পিএম, ১৪ আগস্ট,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৪৭ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা সাধারন মানুষকে জিম্মি করে নির্ধারিত ফি চেয়ে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উদ্যোক্তা সামসু মিয়া ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায়, ৫নং কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের যাত্রা শুরুর পর থেকে উদ্যোক্তা একই ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ গ্রামের মৃত মোঃ মনাফ মিয়া ছেলে সামসু মিয়া ও তার স্ত্রী হ্যাপি বেগম প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমান সরকার ডিজিটাল দেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়নের জনসাধারনের মাঝে ডিজিটাল তথ্য ও সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে যে প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তা যেন রাঘব বোয়াল গিলে খাচ্ছে।
জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ভিজিডি র্কাডের আবেদনের জন্য, অতিরিক্ত টাকা আদায়, অসদাচারণ, অসম্পূর্ণ কাজ, অদক্ষতা সহ সেবা কেন্দ্রে সঠিকভাবে সময় না দেওয়ায় অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকার কারনে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র থেকে সেবার বিনিময়ে মিলছে অতিরিক্ত ফি সহ হয়রানি। জরুরি প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে এসব অনিয়ম সহ্য করছেন এলাকার সাধারন মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায় উদ্যোক্তা সামসু মিয়া ও তার স্ত্রী হ্যাপি বেগম গ্রামের সাধারন মানুষের কাছে সেবার নামে সাধারন ব্যবাসায়ীদের চেয়ে বেশী টাকা আদায় করছেন। যদি কোন সেবা গ্রহীতা অতিরিক্ত টাকা দিতে আপত্তি জানায় তাহলে তার সাথে অসৎ আচরণ সহ ঝগড়াঝাটি, এমনকি মারধর করতেও দ্বিধাবোধ করেন না সামসু দম্পতি।
গ্রাহকদের সাথে অন্যায় আচরণ যেন তার নিত্য দিনের সঙ্গী। জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরম নির্ধারিত ৫০ টাকার বদলে নেওয়া হচ্ছে ১২০ টাকা, জরুরি প্রয়োজনে কেউ জন্ম সনদ নিতে চাইলে ফি গিয়ে ধারায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। জন্ম সনদের ভুল সংশোধন করতে আসা সাধারণ জনগণের কাছ থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ইউনিয়ন পরিষদের ওয়াই ফাই দিয়ে চলছে ইন্টারনেট বাণিজ্য, স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক ১ থেকে ২ শত টাকা নিয়ে ওয়াই ফাই সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি প্রতিবাদ করে সামসু দম্পতি কাছে হেনস্তার স্বাীকার হয়েছেন। কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সদস্য আমেনা বেগম জানান আমরা জনপ্রতিনিধি জনগণের কাছ থেকে বেশি টাকা না নেওয়ার সুপারিশ করলে ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের উদ্যােক্তা হ্যাপি বেগম ও তার স্বামী সামসু মিয়ার কাছে কোন মূল্য পাই না, তিনি বলেন আমরা ইউনিয়নের সদস্য হওয়া সত্বেও যদি তাদের কাছে কোন মূল্য পাই না, তাহলে সাধারণ জনগণ কি মূল্যায়ন পাবে।
তিনি আরোও জানান উনার এক ভোটারের কাছে জন্ম সনদের জন্য ৩ হাজার টাকা দাবি করে, অনেক অনুরোধ করে ১৭০০ টাকা দিয়ে জন্ম সনদ নিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন সামসু দম্পতি।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, আমি অতিরিক্ত টাকা ও ওয়াই ফাই ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে উদ্যোক্তা সামসুর রহমান ও তার স্ত্রীকে নিষেধ করেছি। তারপরও কেন তারা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে আমি তদন্ত সাপেক্ষে সে বিষয়ে প্রয়োজন ব্যবস্থা নিবো।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ওয়াই ফাই ভাড়া দেওয়া ও জন্ম নিবন্ধন সহ অন্যান্য কার্যক্রমে সরকার নির্ধারিত ফির বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। আমাকে কেউ কখনো অভিযোগ করেনি ও জানায়নি, যেহেতু বিষয়টি এখন জেনেছি তাই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।