পুড়ে যাওয়া লাশ দ্রুত দাফন করুন : ফরেনসিক প্রধান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৫ পিএম, ১০ জুলাই,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৫২ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। নিহত এসব শ্রমিকের মরদেহ দ্রুত দাফনে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ।
আজ শনিবার তিনি বলেন, জায়গার সঙ্কুলান না হওয়ায় ইতোমধ্যে ১৫টি মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। কয়েকটি মরদেহ রাখা হচ্ছে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে। মরদেহগুলো আপাতত মর্গে রাখা হলেও দ্রুত দাফনের ব্যবস্থা না করা হলে পচে-গলে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষণ ঘটাবে।
ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ জানান, শুক্রবার (৯ জুলাই) রাতে তার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল ৪৮টি মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। দু-একটি ছাড়া বাকি মরদেহগুলো পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। দেখে চেনার কোনো উপায় নেই। তারা ডিএনএর মাধ্যমে নিহতদের পরিচয় খুঁজে বের করতে নমুনা হিসেবে বুকের পাঁজর সংরক্ষণ করেছেন।
তিনি বলেন, লাশগুলো দেখে যেহেতু চেনার কোনো উপায় নেই তাই রানা প্লাজা ও অন্যান্য দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ যেভাবে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছিল তাদের লাশও দ্রুত দাফন করে ফেলা দরকার। এ ব্যাপারে তারা পুলিশের কাছে প্রস্তাবনা ও পরামর্শ দেবেন। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লাশগুলো কখন দাফন করা হবে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ভয়াবহভাবে আগুনে পুড়ে লাশগুলো কয়লার মতো হয়ে গেছে। এগুলোতে পঁচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াবে। এতগুলো লাশ মর্গের মরচুয়েরিতে রাখার মতো ব্যবস্থা নেই। ঢামেকের মরচুয়েরি কুলারে ইতোমধ্যে ১০টি লাশ রয়েছে। এ কারণে রূপগঞ্জের মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত কক্ষ ও সংলগ্ন আরেকটি ফাঁকা কক্ষে রাখা হয়।
গত ৮ জুলাই বিকেলে রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাসেম ফুডস লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটে। ঘটনার প্রথম দিন তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অর্ধশত শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ১৮টি ইউনিট ২০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর গত ৯ জুলাই সকালে ওই ভবনের চারতলা থেকে ২৬ নারীসহ ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ জনে। ২৯ ঘণ্টা পর ৯ জুলাই রাতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।