রূপগঞ্জে সেজান জুসের অগ্নিকান্ডে ৫৫ জনের মৃত্যু॥ অর্ধশতাধিক আহত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৯ পিএম, ৯ জুলাই,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:০১ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার সেজান জুস মিলের অগ্নিকান্ডে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধার করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ভবনের ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় উদ্ধার কাজ শুরু হবে। তালা বদ্ধ থাকায় ৪র্থ তলার কোন শ্রমিক বের হতে পারেনি। তারা দগ্ধ হয়ে ভবনের ফ্লোরেই মৃত্যু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্মন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
এসময়স্বজনদের খুঁজতে আসা মানুষের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। নিদারুণ এক দৃশ্য। কেউ ছুটছেন স্বজনের খোঁজে। শোকে কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কেউবা বাক্ রুদ্র। কেউবা নিরবে দাঁড়িয়ে আছেন ভবনের পাশে। আবার কেউ কেউ মুর্ছে যাওয়া স্বজনদের পার্শবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। এরকম হৃদয় বিদারক দৃশ্য উপনিত হয় আশপাশের পুরো এলাকায়।
নিখোঁজ শ্রমিকদের খুঁজতে আসা স্বজনরা দ্বিকবিদিগ ছুটাছুটি করেন। কেউবা উত্তেজিত হয়ে কারখানার কর্মকর্তাদের খোঁজেন। বৃহস্পতিবার বিকালে ভবনের ছাদ থেকে এক এক করে লাফিয়ে শ্রমিকরা মাটিতে পড়েন। এঘটনায় অনেকের হাত-পা ভেঙ্গে গেছে। মাথায়, পিঠে মারাত্মক জখম হয়েছেন। নিখোঁজ হয়েছেন ৪৫ জন শ্রমিক। তাদের ৩৩ জনের পরিচয় মিলেছে। শ্রমিকদের খুজঁতে আসা স্বজনদের আর্ত্মনাতে আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে উঠে।
এখানে ৭ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। করোনার কারণে কারখানার কয়েকটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। কারখানার ষ্টোরেজ, কার্টন ও ফুড সেকশন ছয় তলায়। সেখানে চার শতাধিক শ্রমিক কাজ করছিলেন। শতাধিক শ্রমিক দোতলায় ফুড প্যাকেজিংয়ে কাজ করেন। তৃতীয় তলার কার্টরন সেকশন থেকে লাগা আগুন মুহুর্তে দোতলার টোস্ট সেকশন, তৃতীয় তলার লাচ্ছি ও লিচু সেকশন, ৪ ও ৫ তলার স্টোর পর্যন্ত ছড়িয়ে পরে। লকাডাউনের কারণে কারখানা আংশিক চলমান ছিল। সে কারণে ঘটনার দিন কর্মরত ছিল তিন হাজার শ্রমিক। তাদের অধিকাংশের বয়সই ১৮ বছরের নিচে। তারা সবাই নি আয়ের মানুষ।
স্বজনরা জানিয়েছেন, এখানে কর্মরত শ্রমিকদের আয়ে চলে তাদের সংসার। অর্ধাহারে-অনাহারে মানবত জীবন যাপন করছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।