দুর্ঘটনা ঘটালো এসপি পরিবহন গ্রেফতার লস্কার পরিবহনের হেলাপার!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৭ পিএম, ৮ জুন,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০২:০৪ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে একটি সড়ক দুর্ঘটনা মামলায় অন্য বাসের হেলপারকে গ্রেফতার করে জামিন অযোগ্য ধারায় আদালতে সোপর্দ করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে ঝিনাইদহ বাস মালিক সমিতি। তারা ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারের কাছে এ নিয়ে নালিশ দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার জরুরী সভা ডেকে নিরাপরাধ হেলপার গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছেন। অন্যদিকে অজ্ঞাত কারণে ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামিমকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। অনেকের ধারণা নিরীহ হেলপার গ্রেফতার ও আব্দুল মান্নান নামে এক বাস চালকের কাছ থেকে কতদন্ত কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা নেওয়ার কারণে তাকে ক্লোজ করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি সুত্রে জানা গেছে, গত ১৯ মে রাত ৮টার দিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর জামতলা নামক স্থানে এসপি পরিবহনের একটি বাসের (যার নং পাবনা-জ-১১-০০২২) চাকায় পিষ্ট হয়ে একই উপজেলার হামিরহাটি গ্রামের মনছের আলীর ছেলে আক্তার হোসেন (৪৪) ও চাঁদপুর গ্রামের গফুর মোল্লার ছেলে তালেব আলী (৩৮) নিহত হন।
এ ঘটনায় ২০১৮ সালের সংশোধিত সড়ক আইনে অজ্ঞাত গাড়ি, অজ্ঞাত চালক ও অজ্ঞাত হেলপারকে আসামি করে মামলা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পান হরিণাকুন্ডু থানার এসআই শামীম। ঝিনাইদহ জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ওলিয়ার রহমানের ভাষ্যমতে এই দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত এসপি পরিবহনের বাস। অথচ সেই বাসের চালক ও হেলপারকে গ্রেফতার না করে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম লস্কার পরিবহনের হেলপার চান্নু মিয়াকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছেন।
মালিক সমিতির নেতারা বলছেন যারা এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। নিরাপরাধ ব্যক্তিকে কেন হয়রানি করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন তোলেন তারা। এ বিষয়ে পুলিশ সুপারের কাছে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তে অভিযোগ দিয়েছেন ঝিনাইদহ বাস মালিক সমিতি।
মালিক সমিতির কার্যকরি সভাপতি আবু সাইদ অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত দোষিরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
এদিকে আব্দুল মান্নান নামে এক বাস চালক জানান, আমি দুই দিন বদলি ড্রাইভার হিসাবে কাজ করেছিলাম। এই দুর্ঘটনা যখন ঘটে তখন আমি ছিলাম না। অন্য ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছিল। কিন্তু তাদেরকে না ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাকে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে ৭ হাজার টাকা নিয়েছে। আরও টাকা দাবি করে তিনি আমার কাছে আমার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি সহ বিভিন্ন কাগজপত্র চাচ্ছেন।
পুলিশ লাইনসে ক্লোজ হওয়া এসআই শামীম বলেন, টাকা লেনদেনের বিষয়টি সঠিক নয়। মামলাটিতে অজ্ঞাত বাস, অজ্ঞাত ড্রাইভার ও অজ্ঞাত হেলপারকে আসামি করা হয়েছে। আমি তদন্তের স্বার্থে ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র চেয়েছিলাম।
বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা জানান, তদন্ত কর্মকর্তার ক্লোজ হওয়ার সাথে মামলার কোন সম্পর্ক নেই। অজ্ঞাত বাস ও আসামী উল্লেখ হওয়ায় হয়তো ভুল বোঝাবুঝিও হতে পারে। তবে পুলিশ দায়ি বাস ও আসামীকে সনাক্ত করার জন্য খুবই আন্তরিক।