কাঁচপুর সিনহা গার্মেন্টে শ্রমিক বিক্ষোভ, মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৪ এএম, ৮ জুন,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৫৫ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
বকেয়া বেতন ভাতাসহ ৭ দফা দাবি ও সকল অনিয়ম বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গার্মেন্ট শ্রমিকরা।
আজ সোমবার নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে শিল্পনগরী কাঁচপুর এলাকার ওপেক্স ও সিনহা গ্রুপের শ্রমিকরা এ মানববন্ধন করে। তারা সকাল থেকে কাজে যোগ না দিয়ে গার্মেন্টের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এসময় বিক্ষিব্ধ শ্রমিকরা গার্মেন্টের পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখে। তবে শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নেন নি। তারা কোন ভাংচুরও করে নি। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি অব্যহত রাখবে বলে জানান।
এদিকে এ ঘটনার খবর শুনে শিল্পাঞ্চল পুলিশ ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। বিক্ষিব্ধ শ্রমিকরা যাতে করে মহাসড়কে অবস্থান করতে না পারে সে জন্য কঠোর নিরাপত্তায় থাকে শিল্পাঞ্চল পুলিশ সদস্যরা।সোমবার সকাল থেকে দিনভর এ বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। পরে বিকেলে মালিক কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শ্রমিক তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে।
জানা যায়, উপজেলার শিল্পনগরী কাঁচপুরে অবস্থিত ওপেক্স ও সিনহা গ্রুপের সকল শ্রমিকদের প্রতি মাসের বেতন পরিবর্তী মাসের কর্মদিবসের সাতদিনের বেতন ভাতা প্রদান করার কথা থাকলেও গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষ ৩০ তারিখেও প্রদান করে না। এরূপ দু’মাসের বেতন ভাতা বকেয়া রয়ে যায়। এছাড়া শ্রমিকদের সার্ভিসের টাকা ছাড়া জোরপূর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর, বেআইনী ভাবে লে-অফ দেয়াসহ ৭ দফা ও বিভিন্ন অনিয়ম করে ওপেক্স ও সিনহা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের বেতন ভাতা ও ৭ দাবিসহ সকল অনিয়ম বন্ধের দাবিতে কাঁচপুর ওপেক্স ও সিনহা গ্রুপের সকল শ্রমিকরা সোমবার সকাল থেকে কাজে যোগদান না করে গার্মেন্টের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় শ্রমিকরা বিক্ষিৃুব্ধ হয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেয় ও খন্ড খন্ড মিছিল বের করে। এছাড়া শ্রমিকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধনে শ্রমিকরা তাদের ৭ দফা দাবি আদায়ের কথা জানান।
শ্রমিকদের ৭ দফা দাবি হলো অনিযম ভাবে লে-অফ মানি না, ১ থেকে ৭ কর্ম দিবসে বেতন দিতে হবে, মাতৃকালীন টাকা ছুটিতে যাওয়ার পূর্বে প্রদান করতে হবে, চাকুরী ইস্তফা দেওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে সমস্ত পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। যা বিগত ৬ বছরেও দেওয়া হয় নি, অকারনে মামলা দেওয়া চলবে না, চাকুরীর নিশ্চয়তা দিতে হবে ও ফ্যাক্টরী চালাতে না পারলে ৪ মাসের বেতন ছুটির টাকাসহ এবং সার্ভিসের টাকা সম্পূর্ণ দিতে হবে।
এদিকে শ্রমিকরা বিক্ষিব্ধ হয়ে এক পর্যায়ে গার্মেন্টের পরিচালক মোহাম্মদ তারেক রহমান অফিস কক্ষে গিয়ে তাদের দাবি নিয়ে কথা বললে শ্রমিকরা ওই পরিচালককে আটকিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। তবে গার্মেন্ট শ্রমিকরা গার্মেন্টের পাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কে অবস্থান করে নি। তারা কয়েকবার মহাসড়কে অবস্থান নিতে চাইলেও পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এদিকে গার্মেন্ট শ্রমিকদের উত্তেজনার খবর পেয়ে কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কোন শ্রমিককে তারা মহাসড়কে অবস্থান করতে দেয় নি।
শ্রমিক সেলিনা আক্তার, হালিমা, আমেনা বেগম, জমির হোসেন, মোতালেবসহ একাধিক শ্রমিকরা জানান, এ বেতন ভাতার সমস্য গত ৫ বছর যাবত চলছে। তাদের সাথে গেঞ্জাম করে বেতন ভাতা নিতে হয়। আমাদের মাতৃত্বকালীন টাকা পরিশোধ করে না। রিজাইনের টাকা, ছুটির টাকা দেয় না। কিছু বললেই গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষ মামলা ভয় দেখিয়ে হয়রানী করে, অনেক শ্রমিককেও মামলা দেয়।
গার্মেন্টের পরিচালক মোহাম্মদ তারেক রহমান জানান, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া হবে। তবে কোন অযৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া হবে না।