কেশবপুরে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে মাছের ঘের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৪ পিএম, ৩১ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩৯ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
যশোরের কেশবপুর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে এক প্রভাবশালী ঘের মালিক জোরপূর্বক মাছের ঘের করেছে। সম্প্রতি ওই ঘের মালিক তার ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করায় শতাধিক বিঘা জমির ধান, পাট তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ঘটনার প্রতিকারে গত ২৩ মে হাজরাতলা কুড়বিল কমিটির সভাপতি আব্দুল লতিফ মোড়ল ঘের মালিক খালিদ হোসেনকে অভিযুক্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। তিনি ঘের মালিককে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে উপজেলার কন্দর্পপৃর গ্রামের হাজরাতলা কুড়বিলের ১২০ জন কৃষকের তিন ফসলি দেড়‘শ বিঘা জমিতে গায়ের জোরে মাছের ঘের করেন মঙ্গলকোট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেনের ছেলে খালিদ হোসেন। ফলে ওই গ্রামের কৃষকরা হাজরাতলা কুড়বিলে ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হন। এ সময় খালিদ হোসেন ওই বিলের পানি নিষ্কাশনের কালর্ভাট ভরাট করে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করেন। ফলে বিলের চারপাশের শতাধিক বসতভিটা, কবরস্থান বছরে ৬ মাস পানিতে তলিয়ে থাকায় মানুষ কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপণ করতে থাকেন। কবরস্থান পানিবন্দী থাকায় বিল এলাকার কেউ মারাগেলে অন্যত্র নিয়ে দাফন করতে হয়। খালিদ হোসেন সময়মত কৃষকের হারির টাকা ও বোরো আবাদ করতে দেয় না। যে কারণে ঘেরের বিপক্ষে অবস্থানকারি ৯৫ জন কৃষক সম্মিলিতভাবে গত ২৭ জানুয়ারী যশোর বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে খালিদ হোসেনের জোর করে করা ডিড বাতিল ঘোষণা করেন। যার অনুলিপি দেয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে।
ঘেরের জমির মালিক বাবর আলী গাজী জানান, কৃষকরা ঘেরে জমি দিতে রাজি না হওয়ায় সে আমাকেসহ ৭ জন কৃষককে মারপিট করে মারাতœক জখম করেছে। সে একবার পুলিশের হাতে আটক হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব ঘটনায় কৃষকরা বাদি হয়ে থানা ও আদালতে একাধিক মামলা করেছেন। যা বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে, গত ১৩ মে খালিদ হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে হাজরাতলা কুড়বিল আবারও দখল করে মাছ চাষের লক্ষে বিদ্যুৎ চালিত ৩টি সেচপাম্প দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন। এতে অধিকাংশ কৃষকের ধান, পাট পানিতে তলিয়ে গেছে। যে কারণে গত ২৭ মে হাজরাতলা কুড়বিল কমিটির সভাপতি আব্দুল লতিফ মোড়ল পুণরায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আরও একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
এ ব্যাপারে খালিদ হোসেন বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তর থেকে নোটিস পেয়েছি। আমার ঘের আমি করবো তাতে সমস্যা কি। কিছু কুচক্রিমহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার ষড়যন্ত্র করে চলেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম আরাফাত হোসেন বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উক্ত জমিতে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখাসহ বিষয়টি নিরসনে নোটিস করে উভয় পক্ষকে আগামী ৩ জুন তাঁর কার্যালয়ে শুনানীর জন্যে ডাকা হয়েছে।