আ'লীগ নেতার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল স্কুলছাত্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪০ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:০২ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ফরিদপুরের নগরকান্দায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় দুই কিশোরকে দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানোয় আওয়ামী লীগ নেতা দুই কাউন্সিলরকে বহিষ্কার করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমাম রাজী নগরকান্দা উপজেলার চরযশোহরদী ইউনিয়নের চাঁদহাট গ্রামে অবস্থিত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে এ রায় দেন।
ওই দুই কাউন্সিলর হলেন- পাশের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজল শেখ (৪৫) ও দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম ওরফে আমির (৪৪)।
কাউন্সিলর কাজল শেখ এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম দুই নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে নানা ধরনের অনিয়ম হচ্ছে- এ খবর শুনে অভিযান চালায় আদালত। আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি কক্ষ থেকে শিক্ষকরা বই নিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং কয়েকজন পরীক্ষার্থী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় আনুমানিক ১৬/১৭ বছর বয়সী দুই কিশোরকে পরীক্ষা হল থেকে বের হয়ে আসতে দেখা যায়।
ইউএনও জানায়, ওই দুই কিশোরকে চ্যালেঞ্জ করলে তারা জানায় তারা নিজেরা পরীক্ষার্থী নয়। তারা একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা দুজন মুকসুদপুর পৌরসভার এক নম্বর ও দুই নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলরের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল।
(ইউএনও) ইমাম রাজী বলেন, এর ফলে পরীক্ষার্থী ওই দুই কাউন্সিলরকে বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় প্রক্সি দেওয়া ওই দুই কিশোরের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কেন্দ্র সচিবের কাছে ওই কেন্দ্রের তিন শিক্ষককে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।
তবে মুকসুদপুর পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শরিফুল ইসলাম দাবি করে বলেন, তিনি কাউকে দিয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দেননি। তিনি নিজেই পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
বহিষ্কারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজল শেখ (৪৫) বলেন, দেখে লেখার জন্য তাদের দুই কাউন্সিলরকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের হয়ে কেউ প্রক্সি পরীক্ষা দিচ্ছিল না। তিনি দাবি করে বলেন, আমরা নিজেরাই পরীক্ষা দিচ্ছিলাম।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই কেন্দ্রের সচিব সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবতাব মন্ডল বলেন, ইউএনও শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে তার প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার অপরাধে দুই কাউন্সিলর পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছেন। এছাড়া ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের তিন শিক্ষককে বহিস্কারের সুপারিশ করেন।