জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২৭ পিএম, ৭ আগস্ট,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৩৬ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
জ্বালানি তেলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
আজ রবিবার (০৭ আগস্ট) বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। পরে মহাসড়কের আরিচাগামী লেন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা দেড়টার দিকে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।
অবরোধ চলাকালে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক তাসবিবুল গণি। তিনি বলেন, ‘সরকার জনগণের ভোগান্তি কমানোর বিপরীতে মন্ত্রী, আমলাদের পকেট গরম করার জন্য কাজ করছে। দরিদ্র মানুষগুলো মূল্যবৃদ্ধির পর কীভাবে বাঁচবে, তা সরকারের চিন্তার বিষয় নয়।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘সরকার জনগণের কথার কোনো তোয়াক্কাই করছে না। এখন জনগণ কীভাবে বাড়তি খরচ মেটাবে? প্রতিমুহূর্তে সরকার আমাদের শোষণ কাঠামোর মধ্যে ফেলছে। এভাবে আমাদের রক্ত চুষে খাওয়া হচ্ছে। আমরা যখন না খেয়ে মরব, তখন আমাদের আমলারা বিদেশে আয়েশ করবে।’
বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, ‘দেশে হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এখন সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। দেশে একরকম উৎসবের মতো করে দ্রব্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এর পেছনে একের পর এক খোঁড়া যুক্তি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা সবকিছু সয়ে নিচ্ছি সর্বংসহা মাটির মতো। দিন দিন মেরুদণ্ডহীন হয়ে যাচ্ছি। শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সারা দেশ থেকেই এই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ আসা উচিত।’
নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অংশুমান রায় বলেন, ‘দেশে জনগণের ওপর নানা ধরনের নিপীড়ন চলছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দ্রব্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। জনগণের কাছ থেকে টাকা বের করে নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীবান্ধব সরকার এটি করেছে। এখানে বৈশ্বিক পরিস্থিতির দোহাই দেওয়া হচ্ছে। তবে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে না, ঠিক কী কারণে তেলের দামটা বাড়ল।’
গত শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সরকার। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। সেদিন দিবাগত রাত ১২টার পর থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হয়।
এরপর গতকাল প্রথম দিনেই দাম বাড়ার খড়্গ পড়ে পরিবহন খাতে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বিআরটিএর ভাড়া নির্ধারণী কমিটির বৈঠকে গতকাল শনিবার বিকেলে বাসভাড়া সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দূরপাল্লার বাসের ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় ২ টাকা ২০ পয়সা হবে। এ ক্ষেত্রে ভাড়া বাড়ছে কিলোমিটারপ্রতি ৪০ পয়সা, অর্থাৎ ২২ দশমিক ২২ শতাংশ।