রাবিতে স্বাধীনতা দিবসের খাবার ‘কেড়ে খেল’ ছাত্রলীগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৬ এএম, ২৭ মার্চ,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৫ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ করা বিশেষ খাবারের শতাধিক প্যাকেট কেড়ে নিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আজ শনিবার (২৬ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা হলে এ ঘটনা ঘটে। ফলে হলটির অনেক আবাসিক শিক্ষার্থী বিশেষ খাবার থেকে বঞ্চিত হন।
অভিযুক্তরা হলেন- জোহা হল ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন চন্দ এবং তার অনুসারী ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থী বাঁধন ও ওয়াহিদ। এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিন ইসলাম, তার অনুসারী তুষার, মিনাল ও আলামিন। তাদের সঙ্গে অন্য হলের বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মীও ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কমিটি ঘোষণা হয়। কমিটিতে নেতৃত্ব পাওয়ার দুদিনের মাথায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এমন কর্মকাণ্ড ঘটালেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য একবেলা বিশেষ খাবারের বরাদ্দ করে কর্তৃপক্ষ। এজন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৩০ টাকার বিনিময়ে টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। দুপুর ১২টা থেকে হলের ডাইনিং কর্মচারীরা টোকেন জমা নিয়ে খাবার পরিবেশন শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের চিরন্তন চন্দ ও মো. মোমিনসহ অন্তত ২০ জন বিনা টোকেনে খাবার নিতে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত হল কর্তৃপক্ষের নিষেধ সত্ত্বেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে খাবার নিয়ে যান। তারা প্রত্যেকেই ৫-৭টি করে প্যাকেট নিয়ে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
হল সূত্রে জানা যায়, জোহা হলে ৪৩০ জন আবাসিক শিক্ষার্থী থাকেন। আবাসিক শিক্ষার্থী ও হলের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য মোট ৪৮০ প্যাকেট খাবার প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতাদের এমন কর্মকাণ্ডে খাবার ঘাটতি পড়ে।
খাবার না পাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনদিন আগে তারা বিশেষ খাবারের টোকেন কিনেছিলেন। কিন্তু খাবার পাননি। পরে প্রাধ্যক্ষ বাইরে থেকে খাবার এনে তাদের দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলামকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে সভাপতি চিরন্তন চন্দ বলেন, ‘হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার ছাত্রলীগের সবার খাবার একসঙ্গে দেবেন বলে আমরা সেখানে যাই। তবে আমি ডাইনিংয়ে খুব অল্প সময় থাকার পর চলে আসি। চলে আসার পর হলে অনেকে নাম ভাঙিয়ে খাবার নিতে পারে। সে বিষয়ে বলতে পারছি না। আমরা কোনো বেশি খাবারের প্যাকেট নিইনি।’
হল প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা খাবারের প্যাকেটসহ আনুসাঙ্গিক কাজ করছিলাম। খাবার বিতরণ শুরু করলে ছাত্রলীগের প্রায় ২০ জন এসে টোকেন ছাড়াই অনেকগুলো প্যাকেট নিয়ে যায়। আমরা বারবার বলার পরও তারা কোনো কথা শোনেনি। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের জন্য বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘জোহা হলে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা কুপন দেখিয়ে খাবার নিয়েছেন।’