১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়া শিক্ষকের পদত্যাগ, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৬ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৩৯ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষার্থীর মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন তার ওপর অর্পিত ৩টি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান পদ, সহকারী প্রক্টর পদ ও প্রক্টরিয়াল বোর্ডের সদস্য পদ থেকে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেছেন। রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ বা পদত্যাগ না করায় শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তারা ৪ দফা থেকে সরে এসে এখন এক দফা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ছাত্ররা জানান, রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন আগে থেকে কাঁচি হাতে পরীক্ষার হলের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশের সময় যাদের মাথার চুল হাতের মুঠোর মধ্যে ধরা যায়, তাদের মাথার সামনের অংশের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন। এভাবে একে একে ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন। এরপর পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীদের পরিবার তুলে গালিগালাজ করেন।
এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি ব্যাপক ভাইরাল হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান তুহিনকে তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ করেন ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের হুমকি দেন।
এতে ভয়ে তুহিন সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে দ্বারিয়াপুরের শাহমুখদুম ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে দরজা বন্ধ করে ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে বিষয়টি তার সহপাঠীরা টের পেয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ২৮ সেপ্টেম্বর তাদের ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বিক্ষোভ করে এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানায়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন শিক্ষার্থীদের। তবে অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা না হলো আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছি শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ইয়াসমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।