নোয়াখালীর আমিশাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ, দেখার কেউ নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১০ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:১৬ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া কৃষক উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সব দেখার যেন কেউ নেই!
স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহ আলম একজন প্রবাসী, তিনি সাধারণত দেশে খুব বেশী আসেন না। ফলে দীর্ঘদিন থেকে পরিচালনা কমিটির উল্লেখযোগ্য কোন মিটিং হয়নি। কিন্তু এর মাঝে বিদ্যালয়ের বেশ কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ। কিন্তু কমিটির রেজুলেশন বা টেন্ডার ছাড়াই প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার পুরাতন ভবনটি মাত্র ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় কমিটির প্রভাবশালী ১/২ জনসদস্যের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
সে ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে আসলে রাতারাতি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে প্রধান শিক্ষক সহ ঐ ১/২ জন সদস্য মিলে পুরাতন তারিখ দিয়ে একটা রেজুলেশন করা হলেও ভবনের মূল্য ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকাই দেখানো হয়। কিন্তু কমিটির বিদ্যুৎশাহী সদস্য মোজ্জামেল হোসেন জানান, সে সময় কোন রেজুলেশন করা হয়নি। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ভুয়া রেজুলেশন করা হয়।
তিনি বিদ্যালয়টির কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতির জন্য প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্যের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়াও বিদ্যালয়টির মালিকানাধীন কিছু জমি নিয়ে রোকেয়া বেগম গংদের সাথে একটি মামলা আদালতে মামলা চলমান ছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির একজন সদস্য জানান, সভাপতি দীর্ঘ দুই বছরে মাত্র ২টি মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন, তিনি আরো জানান, কমিটির অবহেলার অযোগ্যতার কারণে রোকেয়া বেগম গংরা মাঠ জরিপে ১০ধারা, ৩০ধারা ও ৩১ ধারা না পাওয়ার পরেও আদালতে তাদের পক্ষে রায় পেয়েছে আর এতে বিদ্যালয়টি প্রায় কোটি টাকার জমি হাত ছাড়া হয়েছে।
সুত্রে আরো জানাযায়, করোনার কারণে প্রায় ২ বছর বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপানো বাবদ ২০হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে ও ডিসেম্বর মাসে শুধুমাত্র আপ্যায়ন বিল দেখানো হয়েছে ৩২ হাজার টাকা। বিদ্যালয়টির ১০ম শ্রেনীর একজন ছাত্রের অভিবাবক জানান, পরীক্ষার জন্য ফি নেওয়া হলেও কোন রসিদ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে সবকিছু বন্ধ থাকলেও বেতন ও অনান্য ফি নিয়মিতই সংগ্রহ করা হচ্ছে। এবিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন জানান, এইসব ব্যয় বিদ্যালয়ের স্বার্থে করা হয়েছে। আর রোকেয়া বেগম গংদের মামলাটির রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
সভাপতির অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি জানান, সভাপতি ভার্চুয়াল মিটিং এর মাধ্যমে সব কাজ করেন। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ একটি মহলকে খুশি করতে অযোগ্য ব্যক্তিদের পরিচালনা কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়ায় এলাকার স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন বিভিন্ন অনিয়ম ও দূনীতিতে ধ্বংস হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।