খুবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৪ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৪৯ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী একই বিভাগের এক নারী শিক্ষক। অভিযুক্ত অধ্যাপক ছোটন দেবনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি ছাত্র বিষয়ক পরিচালক। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আসায় তাকে সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ পাওয়ার পর খুবি যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটি ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে।
গতকাল বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযোগকারী শিক্ষিকার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। অপরপক্ষের শুনানিও খুব দ্রুত অনুষ্ঠিত হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি আরও জানায়, অভিযোগ সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রমাণাদি ইতিমধ্যে কমিটির কাছে জমা দেয়া হয়েছে। জানা যায়, চলতি বছরের ২৬শে জানুয়ারি রাতে অভিযুক্ত শিক্ষকের ভাড়া বাসায় ওই নারী শিক্ষিকাকে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন করে। পরে ৩০শে জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ব্যাপারটির জন্য ছোটন দেবনাথ ওই শিক্ষিকার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এ সময় ওই নারী শিক্ষিকা ভবিষ্যতে কোনোরকম যোগাযোগ না করার শর্তে তাকে ক্ষমা করে দেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, সম্প্রতি ঘটনাটি নিয়ে ছোটন দেবনাথ ওই শিক্ষিকার সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ, কুৎসা রটানো ও হয়রানির চেষ্টা করলে চলতি মাসের ৪ তারিখে ওই নারী শিক্ষিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটির কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর ৪ঠা সেপ্টেম্বর শনিবার বৈঠক করে ব্যাপারটি তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটি। এর পরে ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তদন্তের স্বার্থে ছোটন দেবনাথকে গত ৬ই সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব ধরনের কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে ববরখাস্তের চিঠি ইস্যু করা হয়।
অভিযোগকারী শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতি আমার পুর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করছি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমের ন্যায়বিচার পাবো।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছোটন দেবনাথ বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে আমাকে এখনও জানানো হয়নি। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন আছে তাই এ ব্যাপারে আমার এখন মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। তবে তদন্তে আমার পূর্ণ আস্থা আছে, এর মাধ্যমে আসল সত্য বের হয়ে আসবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি প্রফেসর মোসা. তাসলিমা খাতুন বলেন, বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা, ২০০৮ এর ৬.৩ (ঞ) অনুসারে, অপরাধী যদি শিক্ষক হন অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে চাকরিচ্যুতি ও রাষ্ট্রীয় আইনের অধীনে যথোপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তরের বিধান রয়েছে।