চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বশেমুরবিপ্রবিতে ভিসির কক্ষে তালা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০৬ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:০৪ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে উপাচার্যের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কর্মরত ১৫৫ জন কর্মচারী। এছাড়া বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকরা।
আজ বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের ২য় তলায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুবের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে ভেতরে ভিসির কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন কর্মচারীরা।
এসময় চাকরী স্থায়ী করার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ আন্দোলনরত কর্মচারীদের সাথে কথা বলে আন্দোলন প্রত্যাহার করার অনুরোধ করলেও তারা তা না মেনে আন্দোলন চালিয়ে যান। চাকরি স্থায়ীকরণ না হওয়া পযর্ন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
আন্দোলনকারী কাজী নাদিমুজ্জামানসহ আন্দোলনকারীরা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে ১৫৫ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। কিন্তু চাকরি স্থায়ীকরণ ও বেতন না পাওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি খন্দোকার নাসিরউদ্দিন থাকাকালে এসব কর্মচারীদের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী নিয়োগ দেন। বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ ও নিয়মিত বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। বিভিন্ন সময় তাদের চাকরি স্থায়ী ও বেতন নিয়মিত করার আশ্বাস দিলেও অদ্যবধি কোনো সমাধান না হওয়ায় তারা এ আন্দোলনে যায়।
এদিকে, আইন না মেনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া, দীর্ঘ দিন ডিউ হওয়ার পরেও আপগ্রেডেশন বোর্ড না করা এবং ডিউ ডেট বাস্তবায়ন না হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ২য় দিনের মতো পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে পড়েছে।
বশেমুরবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তুহিন মাহমুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে যে সব কর্মকর্তার আপগ্রেডেশন বোর্ড বাকি রয়েছে, আগামী রিজেন্ট বোর্ডে তাদের আপগ্রেডেশন বোর্ডের বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা না করে রিজেন্ট বোর্ডে বিষযটি উত্থাপন করা হবে না বলে জানানো হচ্ছে।
একইসঙ্গে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের জন্য একটি বা দুটি শর্ত শিথিল করার নিয়ম ছিল কিন্তু কোনো ধরনের রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং ব্যতিত সর্বশেষ দু’টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত। এছাড়া ডিউ ডেট থেকে আমাদের পদোন্নতি কার্যকর করা হচ্ছে না। আমাদের মোট তিনটি দাবি রয়েছে এবং এ সব দাবি পূরণ হলেই আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবো।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজ বন্ধ ঘোষণা ও ২৩ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষকরা। এসময় তারা ভিসির কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
শিক্ষক কাজী নাদিম আহম্মেদ ও সোনিয়া নাসরিন বলেন, সাবেক ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিরন থাকাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজ শুরু করেন। দীর্ঘ দিন ধরে এ স্কুলটি পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু সাবেক ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিন পদত্যাগ করার পর অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব ভিসি হয়ে আসলে তিনি স্কুলটি বন্ধ করার ঘোষণা দেন। সেইসঙ্গে আমাদের ২৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়ছে। আমরা স্কুলটি বন্ধ করার ঘোষণা প্রত্যাহার ও বকেয়া বেতন না দেওয়া পযর্ন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।