বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারে অক্টোবরে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:৫৪ পিএম, ১০ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:০৭ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
দেশের অন্য সব স্তরের প্রতিষ্ঠানের আগে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীদের টিকাদানও শেষ করতে চায়। টিকাদান শেষ হলেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। আর সময়টা হতে পারে সেপ্টেম্বরের শেষে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, অক্টোবর তো অনেক দূরে, টিকা দেওয়া শেষ হলে সেপ্টেম্বরের শেষেও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সুযোগ আছে। বিশেষ করে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা না দিয়ে কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পক্ষে নই আমরা।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চাপ রয়েছে। অনেক শিক্ষকও খোলার পক্ষে। তারা বলেছেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার উপায় খুঁজতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পক্ষে মত দিয়েছেন মন্ত্রণালয় ও কোভিড-সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্যরা।
ইউজিসির এক কর্মকর্তা জানান, যে গতিতে টিকা গ্রহণের কাজ চলছে তাতে আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যেই শেষ হবে। তবে যে হারে গণটিকা প্রদান চলছে, তাতে আমাদের শঙ্কা দেখা দিয়েছে শেষ পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী টিকা নিতে পারবে কি না। তবে টিকা পর্যাপ্ত আছে বলে সরকারি দপ্তর থেকে জানানো হচ্ছে। যদি তা-ই হয়, তবে অক্টোবরের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা যেতে পারে।
তথ্য অনুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। এর মধ্যে আবাসিক হলে থাকেন ১ লাখ ৩০ হাজার। তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা দেওয়া তথ্য তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘টিকার জন্য ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৬১ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৯১৪ জন, দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৬ হাজার ৭২ জন। টিকা প্রদানের কাজ খুবই দ্রুত শেষ হবে এমনটি আশা করেন মন্ত্রী।
তবে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪২ লাখ। এর মধ্যে ৩৯ লাখই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থী, যাদের বেশির ভাগেরই আবাসিক হলে থাকার সুযোগ নেই। আবার সরকারি কলেজের আবাসিক হলগুলোতেও কত শিক্ষার্থী আছে তার সঠিক হিসাব নেই। ফলে মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চশিক্ষার সব শিক্ষার্থীকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, গণপরিবহন, রেস্তোরাঁ, মার্কেট সবই খোলা। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো মানা হচ্ছে না। অথচ প্রায় ১৫ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এতে শিক্ষা খাত বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন। সেশনজট বেড়েছে। সবকিছু খোলা থাকলে স্বাস্থবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে বাধা কোথায়?
তবে অনেক অভিভাবক বলেছেন, ঝুঁকির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় না খোলার পক্ষে আমরা। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এরপরও শিক্ষার্থীরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, আমরা এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার পর্যায়ে রয়েছি। সরকার শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই তৎপর। এখন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে।