থাইরয়েডের সমস্যা কমাতে যা খাবেন যা এড়িয়ে চলবেন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:৩৬ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৪৯ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বর্তমান সময়ে আমাদের যত ধরনের অসুখ দেখা দিচ্ছে তার বেশিরভাগই লাইফস্টাইল ডিজিজ। এর অর্থ হলো এগুলোর জন্য দায়ী আমাদের জীবনযাপনের ধরন। আধুনিক জীবনধারা এবং খাদ্যাভ্যাস অনেকক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে। গত তিন দশকে মেটাবলিক সিন্ড্রোম মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে এতটি হলো থাইরয়েডের সমস্যা।
থাইরয়েডের সমস্যা কী?
থাইরয়েড হলো একটি ছোট প্রজাপতির আকৃতির গ্রন্থি যা ঘাড়ের নিচে মাঝামাঝি থাকে। যদিও এটি একটি ছোট অঙ্গ, তবে এটি আমাদের শরীরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই থাইরয়েড গ্রন্থি হরমোন তৈরি করে যা আমাদের বৃদ্ধি, কোষ মেরামত এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গ্রন্থি দ্বারা উৎপাদিত হরমোনের পরিমাণের মধ্যে কোনো ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে তা ক্লান্তি, চুল পড়া, ওজন বৃদ্ধি, ঠান্ডা অনুভব করা ইত্যাদির কারণ হতে পারে।
থাইরয়েড গ্রন্থি এবং খাদ্যের মধ্যে সম্পর্ক
থাইরয়েড রোগ মূলত দুই ধরনের - হাইপোথাইরয়েডিজম (কম হরমোন উৎপাদিত হয়) এবং হাইপারথাইরয়েডিজম (বেশি হরমোন তৈরি হয়)। উভয় অবস্থাই বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। থাইরয়েড রোগের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণে খাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিকর এবং সুষম খাদ্য থাইরয়েডের সমস্যা পুরোপুরি নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে না, কিন্তু সঠিক ওষুধের সাথে যুক্ত হলে উপসর্গ কমাতে পারে। আয়োডিন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-এর মতো কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে তা এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে। জেনে নিন এমন চারটি ফল সম্পর্কে যেগুলো থাইরয়েডের সমস্যা সারাতে কার্যকরী-
আপেল : আপেল স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে একটি এবং বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয়। প্রতিদিন একটি আপেল খেলে তা ওজন বৃদ্ধি রোধ করে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং থাইরয়েড গ্রন্থিকেও কর্মক্ষম অবস্থায় রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, আপেল আমাদের শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে পারে যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। আপেল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে।
বেরি : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় বেরি থাইরয়েড অঙ্গের জন্য চমৎকার। এটি থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদনকে উদ্দীপিত করতে এবং তাদের নির্বিঘেœ কাজ করতে সহায়তা করে। বেরিতে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থও রয়েছে যা আমাদের ফ্রি র্যাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। যদি আপনি ডায়াবেটিস এবং স্থুলতায় ভোগেন তবে বেরি জাতীয় ফল খান।
কমলা : ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কমলা ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে আপনার কোষগুলোকে রক্ষা করে। ফ্রি র্যাডিকেল থাইরয়েড গ্রন্থিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং এর কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, ত্বকের ক্ষতি রোধ করে এবং ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন একটি করে কমলা খান।
আনারস : আনারসে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি এবং ম্যাঙ্গানিজ, এই দুটি পুষ্টি উপাদানই আমাদের শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এই ফলে ভিটামিন বি রয়েছে যা ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করতে পারে। অতিরিক্ত ক্লান্তি কিন্তু থাইরয়েডের অন্যতম লক্ষণ। ক্যান্সার, টিউমার এবং কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগা ব্যক্তিদের জন্যও আনারস উপকারী।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে : যখন থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার কথা আসে, তখন আপনাকে এমন কিছু খাবার বাদ দিতে হবে যাতে গাইট্রোজেন থাকতে পারে। এই ধরনের খাবার পরিমিত খাওয়া উচিত। এছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাবার বা প্রসেসড ফুড খাওয়াও কমিয়ে আনা আনা উচিত। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে কেক, কুকিজ, চিপস, টফু, টেম্পে, এডামেম বিন, সয়া দুধ, পীচ, নাশপাতি, কফি, গ্রিন টি এবং অ্যালকোহল এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলবেন।