১০ বছর আগে থেকেই হার্ট অ্যাটাকের যে লক্ষণ দেখা দেয়
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯:৩৯ পিএম, ১০ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৩৩ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
হার্ট অ্যাটাক হলো আকস্মিক মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে পরিচিত হার্ট অ্যাটাক সতর্কতা ছাড়াই ঘটে। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, এনজিনা পেক্টোরিস নামক একটি অবস্থা হার্ট অ্যাটাকের এক দশক আগ থেকেই দেখা দিতে পারে।
এনজাইনা পেক্টোরিস কি?
মায়ো ক্লিনিকের মতে, এনজিনা পেক্টোরিস হলো করোনারি ধমনী রোগের একটি উপসর্গ। প্রায়ই বুকে চাপ ধরা, ভারী হওয়া, বুকে আঁটসাঁট বা ব্যথা হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় এক্ষেত্রে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য (এএইচএ) অনুসারে, ৪ ধরনের এনজাইনা পেক্টোরিস আছে। যথা- স্থিতিশীল এনজাইনা, অস্থির এনজিনা, মাইক্রোভাসকুলার এনজাইনা ও ভাসোস্পাস্টিক বা বৈকল্পিক এনজিনা।
গবেষণা কী বলছে?
এএইচএ জার্নালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ১০ বছর আগে এনজিনা পেক্টোরিস হতে পারে। ‘এনআইএইচআর অ্যাপ্লাইড রিসার্চ কোলাবরেশন ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস’ ২০০২-২০১৮ সালের মধ্যে জিপি, হাসপাতাল ও মৃত্যুর ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষণাটি করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, অস্বাভাবিক বুকে ব্যথাসহ রোগীদের প্রথম বছরে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ১৫ শতাংশ বেশি ছিল।
গবেষণায় আরও পাওয়া গেছে, কার্ডিওভাসকুলার রোগের জন্য শীর্ষ ঝুঁকিতে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে লিপিড-হ্রাসকারী ওষুধ শুধু ৩০ শতাংশ রোগীকে দেওয়া হয়েছিল।
গবেষকদের মতে, যাদের অব্যক্ত বুকে ব্যথা ও উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ প্রোফাইল তাদের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানো যায়।
গবেষণা প্রকাশের সময়, প্রফেসর কেলভিন জর্ডান, প্রজেক্ট লিড ও কিল ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের বায়োস্ট্যাটিস্টিকসের অধ্যাপক বলেন, বুকে ব্যথার অনেক সম্ভাব্য কারণ আছে। তবে বেশিরভাগ রোগীই বুকে ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে দেরি করে ফেলেন।
এনআইএইচআর লিসেস্টার বায়োমেডিকাল রিসার্চ সেন্টারের ডিরেক্টর প্রফেসর মেলানি ডেভিসের মতে, এই গবেষণা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার জন্য একটি সম্ভাব্য নতুন পথ নির্দেশ করে।
এএইচএ’র তথ্য অনুযায়ী হার্ট অ্যাটাকের কিছু সতর্কতা লক্ষণের মধ্যে আছে-
১. বুকে অস্বস্তি
২. শরীরের উপরের অংশে অস্বস্তি
৩. নিঃশ্বাসের দুর্বলতা
৪. বমি বমি ভাব
৫. ঠান্ডা ঘাম
৬. মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাব্যথা
৭. দুশ্চিন্তা বা ক্লান্তি
৮. কাশি
৯. শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।
হার্ট অ্যাটাক নাকি গ্যাস্টিকের সমস্যা পার্থক্য করবেন যেভাবে?
হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং বলেছে, বুকের হাড় থেকে শুরু হওয়া বুকের ব্যথা গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ হতে পারে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাকের মধ্যে বুকের মাঝখানে অস্বস্তি থাকে, যা কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়।
কখনো কখনো এই ব্যথা চলে যায় আবার ফেরতও আসতে পারে। এক্ষেত্রে বুকে ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে চাপ ও অস্বস্তি হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক নাকি গ্যাস্টিকের সমস্যার কারণে বুকে অস্বস্তি হওয়ার বিষয়টি আলাদা করা অনেকের জন্যই কঠিন হতে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কিত অন্যান্য উপসর্গগুলোতে মনোযোগ দিতে হবে। বুক জ্বালাপোড়ার সঙ্গে প্রায়ই বুক জ্বালাপোড়া, মুখে তিক্ত বা অম্লীয় স্বাদ অথবা শুয়ে থাকা বা বাঁকানোর সময় ব্যথা আরও খারাপ হয়।
হার্ট অ্যাটাকের ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যা, চোয়াল, ঘাড়ে, পিঠে, বাহুতে বা কাঁধে ব্যথা বা অস্বস্তিসহ বুকের ব্যথার লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। যারা হার্ট অ্যাটাকের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন বিশেষজ্ঞরা তাদেরকে পরামর্শ দেন নিয়মিত হার্টের পরীক্ষা ও স্ক্রিনিংয়ের জন্য।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া