যেসব সবজি অতিরিক্ত খেলে বিপদ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩:০৪ এএম, ১৩ জুন,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১০ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সুস্থ-সবলভাবে বেঁচে থাকতে পুষ্টিকর খাবার খেতেই হবে। এর চাহিদা পূরণে শাকসবজির অবদান অনন্য। শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থসহ অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান। সে সাথে আঁশে ভরপুর। এসব পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, খাবারে রুচি আনে। এ ছাড়া হজমশক্তি বৃদ্ধিতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে যথেষ্ট সহায়তা করে।
করোনাকালে শরীর ভালো রাখতে শাকসবজির জুড়ি মেলা ভার। এই কারণেই মানুষ খাবার সম্পর্কে সচেতন। এখন মানুষ ফল এবং সবজি খেতে বেশি পছন্দ করেন। তবে কিছু শাকসবজি এমন আছে, যেগুলো উপকারিতার পাশাপাশি আপনার ক্ষতিও করতে পারে। এমন কয়েকটি শাকসবজি সম্পর্কে জেনে নিন, যা আপনার অত্যধিক পরিমাণে খাওয়া ভালো নয়।
পালং শাক:
পালং শাকের মতো শাকসবজিতে পুষ্টি থাকে অনেক। তাই এই শাকের জুস স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে এতে থাকা অক্সালেটের পরিমাণ বেশি হলে তা উল্টো শরীরের ক্ষতি করতে পারে। অক্সালেট বেশি পরিমাণে খেলে তা কিডনির পাথর তৈরি করতে পারে।
গাজর:
গাজর খাওয়ার সময়, আপনাকে এর পরিমাণের উপর বিশেষ যতœ নিতে হবে। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর সেবন করেন তবে আপনার ত্বকের রঙ হলুদ বা কমলাতে পরিবর্তিত হয়। কারণ, গাজরে বিটা ক্যারোটিন থাকে যা আপনার দেহে অতিরিক্ত প্রবেশ করে। তবে এর পরিমাণের কারণে এটি রক্তে প্রবাহিত হয় না এবং আপনার ত্বকে জমা হয়। আপনি যখন খুব বেশি কুমড়া এবং মিষ্টি আলু সেবন করেন তখন এটিও ঘটে।
টমেটো:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর টমেটোর আছে নানা গুণ। টমেটো হচ্ছে একমাত্র সবজি, যাতে চার রকমের ক্যারোটিনয়েড বা ভিটামিন ‘এ’ আছে বিপুল পরিমাণে। খাবারে স্বাদ আনতেও অনেকে টমেটো ব্যবহার করেন। কিন্তু জানেন কি, টমেটোর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, যা এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত টমেটো খেলে হজমে গন্ডগোল থেকে শুরু করে কিডনির সমস্যা, চুলকানির মতো শরীরে নানা সমস্যা হতে পারে।
ব্রকোলি:
ব্রকোলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, কে ওয়ান, পটাশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ আছে। তাই অনেকেই ব্রকোলির জুস করে খেতে পছন্দ করেন। তবে এই সবজি কিন্তু হজম করা কষ্টকর। এর জুস পেট ফাঁপা, গ্যাস তৈরি করতে পারে।
ফুলকপি:
পেটের সমস্যা বাড়ায় ফুলকপি। ফুলকপি অ্যাসিডিটির মতো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা তৈরি করতে পারে। আসলে, এই সবজির অভ্যন্তরে প্রচুর পুষ্টি পাওয়া যায় যা আপনাকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তবে এর ভিতরে রাইফনোজ নামে একটি যৌগ পাওয়া যায় যা এক ধরণের কার্বস। আমাদের শরীরে এ জাতীয় যৌগটি পুরোপুরি হজম করার ক্ষমতা নেই। সুতরাং, ফুলকপি কাঁচা খাওয়া পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে। এটি আপনার পেটে ব্যথাও করতে পারে।
বিট:
ওজন কমানোর জন্য বিটরুটও বা বিট খান অনেকেই। অত্যধিক পরিমাণ এই সবজি খেলে প্রস্রাবের রঙ লাল বা গোলাপী দেখা শুরু করে। এর কারণ হল বিটরুটের অভ্যন্তরে পাওয়া উপাদানগুলি। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। এটা খুবই সাধারণ. তবে আপনার সীমিত পরিমাণে বিটরুট খাওয়া উচিত।
কমলা লেবু:
আমাদের শরীরের জন্য লেবু ভালো. লেবুর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ত্বক ভালো রাখে, দাঁত ও হাড়ের গঠনে সাহায্য করে কিন্তু অতিরিক্ত খেলে নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। যেমন লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড থেকে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়। দাঁতের উপর সাদা স্তর পড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে লেবু খেলে মুখের মধ্যে থাকা নরম কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখান থেকে মুখের মধ্যে ফোঁড়া বা ফুসকুড়ি হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। সাইট্রিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ যে কোনও ফল খেলেই এই সমস্যা হতে পারে।
মাশরুম:
মাশরুম একটি অত্যন্ত সুস্বাদু খাদ্য, যাকে আমরা সবজির মধ্যে আমিষ বলি। মাশরুমের খাদ্যগুণও প্রচুর, যা নিরামিষাশীদের দেহে অত্যাবশ্যকীয় উপাদানগুলোর চাহিদা মেটায়। তাই বলে সব মাশরুমই খাদ্য নয়, এমনকি হাতে ধরার জন্যও নিরাপদ নয়। মাশরুম ভিটামিন ডি এর সেরা উৎস। তবে, বেশি খেলে ত্বকের সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে।