ভবিষ্যতে সাংবাদিকরা যেন হেনস্তার শিকার না হন, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকবো - তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৮ এএম, ২৪ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৪৬ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে পেশাগত দায়িত্বে ফিরতে সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আজ রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বিএফইউজে, জাতীয় প্রেসক্লাব, ডিইউজে, ডিআরইউ, বিএসআরএফ, বিজেসি ও বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম নেতৃবৃন্দের সাথে মন্ত্রী মতবিনিময় করেন।
মন্ত্রীর মতে, বাংলাদেশে একটি পক্ষ সবসময় ঘাপটি মেরে থাকে। কোনো ইস্যু পেলে সেটিকে আন্তর্জাতিকীকরণের অপচেষ্টা করে এবং তা পুঁজি করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমস্ত শক্তিকে আমি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাই, আমাদের কোনো কর্মকান্ড যেন তাদের হাতে হাতিয়ার তুলে না দেয়। এবং একইসাথে কোনো সাংবাদিক যাতে ভবিষ্যতে হেনস্তার শিকার না হয়, সে বিষয়েও আমরা সবসময় সচেষ্ট থাকবো। রোজিনা ইসলামের জামিনে সন্তোষ প্রকাশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের কোনো বিরোধিতা করেনি অর্থাৎ রাষ্ট্রপক্ষ চেয়েছে তার জামিন হোক। এজন্য আপনাদের সাথে আমিও সন্তোষ প্রকাশ করছি। ঘটনাটি অবশ্যই অনভিপ্রেত ছিল এবং আপনারা মনের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এখন জামিন হয়েছে, সুতরাং অবশ্যই আপনারা আবার আগের মতো পেশাগত কাজে ফেরত যাবেন সেটিই আমার প্রত্যাশা।
বিশ্বের বহু দেশে অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট বিদ্যমান উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ১৯২৩ সনে যে অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট করা হয়েছিল, সেই একই আইন বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত এবং পাকিস্তানেও বিদ্যমান। এছাড়া কমনওয়েলথভুক্ত আরো ৪০টি দেশ ছাড়াও কানাডা ২০০১ সালে আগের আইনকে পরিবর্তন করে সিকিউরিটি অফ ইনফরমেশন অ্যাক্ট করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট নামে কোনো আইন না থাকলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসপিওনাজ অ্যাক্ট ১৯১৭ বিদ্যমান আছে। আয়ারল্যান্ডে অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ১৯৬৩, হংকংয়ে অফিশিয়াল সিক্রেসি অর্ডিনেন্স ১৯৭৭, মালয়েশিয়ায় অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ১৯৬২, সিঙ্গাপুরে অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ১৯৩৫সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই ধরনের আইন আছে। তথ্যমন্ত্রী এ সময় সাংবাদিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের কল্যাণে এবং অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য বহু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, তার হাতে গড়া সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার সাংবাদিক উপকৃত হয়েছেন। তার গঠিত তথ্য কমিশনের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তথ্যের জন্য আবেদনের পর কোনো ক্ষেত্রে যদি মন্ত্রণালয় তথ্য না দিয়ে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও কমিশন গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. আব্দুল মজিদ, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, বিএসআরএফ সভাপতি তপন কুমার বিশ্বাস, বিজেসি সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, সম্পাদক ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী উত্থাপিত অনিয়মিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন বন্ধের দাবির সাথে একমত হয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেই পত্রিকাগুলোর ভৌতিক প্রচার সংখ্যা সংশোধনের কাজ চলছে, আপনারা সমর্থন দিয়েছেন, এজন্য ধন্যবাদ। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে আরো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার দাবিও অবশ্যই বিবেচ্য। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ও ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের দাবির প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমকর্মী আইনের বিষয়ে ড. হাছান বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের দেয়া অবজারভেশন অনুযায়ী আমরা এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করেছি, আশা করছি খুব দ্রুত আমরা এটি সম্পন্ন করতে পারবো। এটি পাস হলে আমি মনে করি রেডিও, টেলিভিশন অর্থাৎ সম্প্রচারের সাথে যুক্ত সাংবাদিকসহ সকল সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হবে।