আওয়ামীলীগের দু'গ্রুপের দ্বন্দে সভা পন্ড, পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন-উত্তেজনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৩ পিএম, ৭ মার্চ,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৫৮ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীতে আওয়ামীলীগের দু'গ্রুপের দ্বন্দে কার্যকরী কমিটির সভা পন্ড হয়ে গেছে। চরম উত্তেজনার মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে একে অপরকে দোষারোপ করেছে উপজেলা সভাপতি আব্দুল মান্নান খান ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান অরুন।
এ নিয়ে শহরে দুই গ্রুপের নেতা কর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। জানা যায়, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শনিবার বেলা ১১টার দিকে আবুল হোসেন অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সভা শুরু হলে উপস্থিত বহিস্কৃত প্রভাবশালী দুইজন সদস্যের বিষয়ে আপত্তি তোলেন উপজেলা সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র শামসুজ্জামান অরুন।
এসময় চরম হট্টগোলের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা সভাপতি আব্দুল মান্নান খান উক্ত সভা মুলতবী ঘোষনা করেন। পরে তার নিজ কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষনিক মতামত দেন তিনি। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে দপ্তর সম্পাদক আসাদুর রহমান আশা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।
জানা যায়, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। কার্য নির্বাহী সভায় মুলতবী ঘোষণার পরপরই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খানের নিজ কার্যালয়ে এসে দুপুর ১টার সময় সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলহাজ্ব জয়নাল আবেদিন এবং আরেক সদস্য আবদুল মাজেদ মাস্টারকে কার্যনির্বাহী সভা থেকে বের করে দেওয়ার জোর দাবি জানান বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শামসুল জামান অরুণ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাধারণ ক্ষমার কারণে তারা এখনও দলের সদস্য আছে। তাদেরকে বের করে দেবার কথা বললে আমি তার প্রতিবাদ জানাই। পরবর্তীতে আমার কথা না মানলে কার্যনির্বাহী সভা মুলতবি ঘোষণা করে আমি সহ অনেকেই সভাস্থল ত্যাগ করেছি।
এর পরপরই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান অরুণ দুপুর তিনটার সময় কুন্ডুপাড়া নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে। স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ এর উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে শামসুজ্জামান অরুন বলেন, আগের বর্ধিত সভার কার্যবিধি অনুমোদন, বিভিন্ন ইউনিয়নের নতুন কমিটি গঠন, বিভিন্ন জনসভায় বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা ছিল শনিবারের কার্যনির্বাহী সভায়।
এসময় তিনি আরো বলেন, মূলত এই সভা বন্ধের জন্য নানা ইস্যু খুঁজেছেন সভাপতি। তিনি বলেন, সর্বশেষ কোন কিছু না পেয়ে বহিস্কৃত উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই নেতাকে সভা স্থলে ডেকে আনেন। সে সময় আমিসহ বেশ কিছু নেতা বহিস্কৃত দুই নেতাকে বের করে দেবার কথা বললেই সভাপতি মান্নান খান কার্যনির্বাহী সভা মুলতবী ঘোষণা করে সবাই সভাস্থল ত্যাগ করেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি জালান খাঁ গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি আওয়ামীলীর এক সভায় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া পরিবারকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ শেষ পর্যন্ত প্রকাশ্যে চলে এলে শহরে দুই গ্রুপের নেতা কর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এসময় উপজেলা চত্বর ও খাদ্য গুদামের আশপাশে দুগ্রুপের কয়েকশত নেতাকর্মী জড় হয়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। টহল দিতে দেখা গেছে র্যাব ও ডিবি পুলিশের সদস্যদের।