মজনুসহ ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ - রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৯ এএম, ৫ মার্চ,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০১:১৭ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি রফিকুল আলম মজনুসহ ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আল জাজিরায় কুকীর্তি ফাঁস, দুর্নীতির মহাসড়ক নির্মাণ এবং সরকারি হেফাজতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে দেশ-বিদেশের মানুষ এই মাফিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যে ধিক্কার জানাচ্ছে তাতে সরকারের মাথা বিগড়ে গেছে। সেজন্য তারা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে বিরোধী দল ও চিন্তার মানুষের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর জুলুমের উগ্রগতি চারদিকে দৃশ্যমান। সেই কারণে সংবিধানে স্বীকৃত সভা-সমাবেশের ওপর সিরিজ আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে সরকারের পেটোয়া পুলিশ বাহিনী। হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে বিএনপিসহ যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল তথা অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। এই উদ্দেশ্য অত্যন্ত ভয়ংকর। সবাই আশঙ্কা করছে-পুলিশি এই হানার মধ্যে পূর্বের ন্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুম ও বিচার-বহির্ভূত হত্যার মতো কোনো ঘটনা হতে পারে। কারণ নির্দয় জুলুম ও আওয়ামী লীগ অভিন্ন সত্তা। আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্রের পক্ষে স্বাস্থ্যকর হয়নি।
তিনি বলেন, হত্যার আসামির দন্ড মওকুফ হয়, দ্রুত জামিন হয়, লুটপাটকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে, দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারীরা সহজেই দেশ ছাড়তে পারে, অথচ মানুষ এসবের সমালোচনা করলেই তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। নিপীড়ন আর হুংকারের স্বরে এখন দেশশাসন চলছে। মুশতাক ফাঁসির আসামি নন, তবুও তাকে কারাগারের মধ্যে জীবন দিতে হলো। সরকার মনে করছে, যারা সমালোচনা করে তারা প্রত্যেকেই অপরাধী, সুতরাং কারাগার এবং মৃত্যুই তাদের একমাত্র প্রাপ্য। এই কর্মসূচি নব্য বাকশালী সরকারের বাস্তবায়নের লক্ষ্য। সেজন্যই গণতন্ত্রকে অনুপস্থিত করে বাকশালের মৃতদেহকে ঘাড়ে করে বয়ে বেড়াচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আজ প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সভাকে বানচাল করতে শুরু থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। তারা সভাকে কেন্দ্র করে ক্ষুধার্ত হায়েনার মতো চারিদিকে ওত পেতে ছিল। সভা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই নেতাকর্মীদের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে গ্রেফতারের হিড়িক শুরু করে এবং জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি রফিকুল আলম মজনুকে আটক করে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব, ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবু খালেক টিপু, বন্দর থানা যুবদল নেতা মাহবুব, রুপনগর থানা যুবদলের সহ-প্রচার সম্পাদক মোঃ ফাহিম, সূত্রাপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সৌরভ রাসেল, কামরাঙ্গীর চর থানা যুবদলের সদস্য দিলগণি, কাফরুল থানা যুবদল নেতা মোঃ ওয়াহিদ, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা যুবদল নেতা তরিকুল ইসলাম রুবেল, যুবদল নেতা আব্দুল মান্নান, আব্দুর রাজ্জাক, মোঃ সাগর, ঢাকা জেলা ধামরাই থানা যুবদল নেতা মোঃ শিপলু, মোশাররফ হোসেন ও কেরানীগঞ্জ থানা যুবদল নেতা মোঃ রুবেলসহ প্রায় ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এমনকি সভাস্থলে উপস্থিত বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথেও পুলিশ অসদাচরণ করে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গুম, অপহরণ, খুন, গুপ্তহত্যা, গলাবাজি ও মিথ্যা ভাষণের অদ্ভুত রসায়ন এই নিশিরাতের সরকার যুবক-তরুণের আওয়াজে বিচলিত হয়ে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। এজন্য বিএনপিকে নির্মূল করতে সকল শক্তি নিয়োগ করেছে তারা। কিন্তু তারা উপলব্ধি করছে না, যেকোন মুহূর্তেই ক্ষমতার ঋতু পরিবর্তন হয়ে যাবে। পরিবর্তনের ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে। মসনদ ধুলোতে লুটোপুটি খেতে থাকবে। মানুষ এখন রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। পুলিশ দিয়ে বিক্ষোভ-প্রতিরোধ দমানো যাবে না। আমি আজ প্রেসক্লাবের সামনে যুবদলের শান্তিপূর্ণ সভাতে পুলিশের হামলা ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে অবিলম্বে রফিকুল আলম মজনুসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। আহত নেতাকর্মীদের দ্রæত সুস্থতা কামনা করছি।