সরকার গণতন্ত্র হত্যা করে মাফিয়াতন্ত্র চালু করেছে - রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৮ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৫১ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২৪
সরকার গণতন্ত্র হত্যা করে মাফিয়াতন্ত্র চালু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আলজাজিরা প্রচারিত খবরের কুকীর্তি ঢাকার জন্য দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানের খেতাব বাতিলের পাঁয়তারা করছে। এই খেতাব বাতিল হলে আপনি (সরকার) অপমানিত হবেন, জিয়াউর রহমানের কিছু হবে না। জিয়াউর রহমান সুপ্রতিষ্ঠিত বীর মুক্তিযোদ্ধা। নিজের কমান্ডারকে হত্যা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশ ও জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধ করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আপনি সেই লোকটিকে অপমান করবেন? করতে পারেন কিন্তু তাতে তাঁর (জিয়াউর রহমানের) কিছু যায় আসে না। জনগণ আপনাদের মনে রাখবে। জনগণ সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনগণের আদালত সবচেয়ে বড় আদালত। সেই আদালতের প্রধান বিচারপতি জনগণ নিজেই। আমি আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীনদের বলতে চাই, জনগণের আদালতের সামনে আপনাদের দাঁড়াতে হবে, প্রস্তুত হন।
আজ মঙ্গলবার সকালের জাতীয় প্রসক্লাবের সামনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের ‘সিদ্ধান্ত’ অপচেষ্টার প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। মানববন্ধনের আয়োজন করে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণের আদালতে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশে অনেক তন্ত্র আছে। হাসিনাতন্ত্র আছে, মিথ্যাতন্ত্র, লুটপাটতন্ত্র, ব্যাংক লোপাট করার তন্ত্র, জাতীয় অর্থনীতি লুটপাট করার তন্ত্র। শুধু একটি তন্ত্র নেই, সেটি হচ্ছে গণতন্ত্র। এই গণতন্ত্রের জন্য আজকের লড়াই। এই গণতন্ত্র নেই বলে গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া বন্দি। দেশের শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গোপনে, অন্ধকারে কত অনাচার করছে সরকার। কত ধরনের অপকীর্তি করছে, কত ধরনের অন্যায় করছে। এসব করে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেছে। কথা বলার স্বাধীনতা হত্যা করে, গণতন্ত্র হত্যা করে, খবরের কাগজ পড়ার স্বাধীনতা হত্যা করে দেশ চালাতে গেলে মাফিয়া দরকার। যে সরকার মাফিয়াদের দিয়ে দেশ চালায় সে নিজে একজন মাফিয়া। রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে জিয়াউর রহমানের নাম লেখা হয়েছে। আল-জাজিরা প্রচারিত সংবাদ থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজা দিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এখানে কিন্তু অন্য কোনো কারণ নেই। আলজাজিরা থেকে দৃষ্টি এদিকে নিয়ে আসার জন্য এসব করা হয়েছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আজকে ওবায়দুল কাদের নোয়াখালীতে দুটি গ্রুপ তৈরি করে রেখেছেন। সেখানে তার ভাই মির্জা কাদেরের আন্দোলনে নিরীহ সাংবাদিক মুজাক্কিরকে প্রাণ দিতে হলো। এই হত্যাকান্ডের দায় প্রধানমন্ত্রীর। এই হত্যার দায় ওবায়দুল কাদেরের। তবুও তাদের কোনো অনুশোচনা নেই। ওদের সমস্ত লজ্জা সরম ধুয়ে মুছে নিচে ফেলে দিয়েছে।
সরকার ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের খেতাব কেড়ে নিলে দেশের সম্মান ভূলুণ্ঠিত হয়। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন- মুক্তিযুদ্ধের সময় ৮০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা লড়াই করেছেন। অথচ আওয়ামী লীগ তালিকা করছে আড়াই লাখ। কারণ ওদের আত্মীয়-স্বজন, নাতি-নাতনী যাদের একাত্তর সালে জন্ম হয়নি তাদেরও তালিকা করছেন এই আওয়ামী লীগ সরকার। আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা মুক্তিযুদ্ধ করেননি, তারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি- কিভাবে রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। সেজন্য তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব কেড়ে নিতে চায়, তাদেরকে অপমানিত করতে চায়। তারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরি করছেন আওয়ামী লীগের লোকজনদের দিয়ে। ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আবদুস সালামের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন ড্যাবের সহ-সভাপতি ডা. সিরাজুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান, যুগ্ম মহাসচিব ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. দোলন, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, শহিদুল আলম, ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. মিজানুর রহমান, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, ডা. নিলোফা ইয়াসমিন, ডা. ফারুক আহমেদ, যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ।