ফেসবুকে সাংবাদিকদের গালি দিলেন সাবেক সংসদ সদস্য বদি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:০৯ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কমেন্ট সেকশনে সাংবাদিকদের গালিগালাজ করতে দেখা গেছে উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি। এ নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দা। বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সাংবাদিক মামুন টেকনাফ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গতকাল ১০১ জনের মামলার রায় কী হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন কমেন্টে জানিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করুন? এমন একটি স্ট্যাটাস দেয়া হয়। সেই স্ট্যাটাসের কমেন্টসে তানিয়া সুলতানা নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ২৩ নভেম্বর একটি পত্রিকার প্রকাশিত ‘সাজা কমাতে ৫ কোটি টাকার মিশন’ শিরোনামের সংবাদটি শেয়ার করেন। সেই কমেন্টের নিচে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি তার আইডি থেকে লিখেছেন সাংবাদিকরা তাদের (১০১ ইয়াবা কারবারির) বালও ছিঁড়তে পারবে না। টাকার জন্য মিথ্যা নিউজ করে নিরপরাধীদের অপরাধী বানাতে চাচ্ছে। আবদুর রহমান বদি এমন আচরণের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, আত্মসমর্পণকারী ১০১ ইয়াবা কারবারির মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য বদির চার ভাইসহ ১২ জন আত্মীয় রয়েছেন।
একটি সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন মতে, উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির চার ভাই আব্দুর শুক্কুর, আমিনুর রহমান ওরফে আব্দুল আমিন, শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক, ফয়সাল রহমান, বদির বড় বোনের ছেলে (ভাগ্নে) মো. সাহেদ রহমান নিপু, বদির ফুফাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেল, চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম, বদির খালাতো ভাই মং অং থেইন ওরফে মমচি, ফুফাতো বোনের ছেলে সামছুল আলম শামীম ওরফে হাসু, বদির তিন বেয়াই (তালতো ভাই) সাহেদ কামাল ওরফে সাহেদ ও মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে দানু বর্তমানে টেকনাফে নেই। তারা ঢাকা ও চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া বদির ফুফাত ভাই আত্মসমর্পণকারী নুরুল আলম ওরফে নুরা জামিনে বের হওয়ার পর ফের ইয়াবাসহ আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন। বদির বেয়াই আত্মসমর্পণকারী ছৈয়দ হোসেন অন্য আরেকটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন। তাছাড়া এই ১০১ ইয়াবা কারবারির অধিকাংশই বদির অনুসারী ও ব্যবসায়িক পার্টনার। এছাড়া এই কারবারিদের জানমাল হেফাজত নিন্ডিত করতেই ওসি প্রদীপকে ব্যবহার করে ওই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান করা হয়। ওই অনুষ্ঠানের খরচও বহন করেছিলেন বদি। এদিকে বদির এমন কমেন্টেসের পর একটি পেশাজীবী সংগঠনের এক দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গেল কয়েকদিন ধরেই প্রচার ছিল বদির ভাই সবকিছু ম্যানেজ করতে ফান্ড সংগ্রহ করছে। আর রায়ের কয়েক ঘণ্টা আগে বদি আশালীন মন্তব্য করে বলেছেন, ইয়াবা কারবারিদের কিছুই করতে পারবে না। যা দৃষ্টিকটু। আদালতের রায়ও বদির ওই কমেন্টেসের কারণে বিতর্কে পড়ে গেল। কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল বলেন, সাংবাদিকদের নিয়ে একজন সাবেক সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য মানানসই নই। তার ব্যবহারে দায়িত্বশীলতার ছাপ নেই। এ বিষয়ে জানতে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।