চসিক নির্বাচন, খুন, হামলা আর সংঘর্ষের মাঝে শেষ হল ভোটগ্রহণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫০ পিএম, ২৭ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:২৪ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সমর্থক খুন, ভোটকেন্দ্রে হামলা, সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, এজেন্টদের মারধর ও লাঞ্ছিত করাসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের দাবি, বুধবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর তার এজেন্টদের মারধর করে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। নারী এজেন্টদের লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ করেন তিনি।
এছাড়া, আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিল প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে নগরীর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দু’জন নিহত এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন।
সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পরপরই খুলশী থানার ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আমবাগান ইউসুফ স্কুলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সির প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় গুলিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এতে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভোটগ্রহণ শুরুর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় পাহাড়তলীর ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে আওয়ামী প্রার্থী নুরুল আমিন ও বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের সমর্থক দুই ভাইয়ের বিরোধে বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই নিজাম উদ্দিন মুন্না নিহত হন।
এসব ছাড়াও বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সকালে চকবাজার কাতালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংঘর্ষে একজন আহত হয়েছেন।
লালখান বাজার চানমারি রোডের শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল পৌনে ৯টা থেকে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় হকিস্টিক ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায় দুপক্ষ। কাচের বোতল ও ইটপাটকেল ছোড়া হয় এলোপাতাড়ি। পরে বিজিবি ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানায়।
পুলিশ লাইন কেন্দ্রেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলালের সমর্থক শহীদুল ইসলাম শহীদ।
এদিকে, অনেক কেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোটারদের দেখা মেলেনি। কিছু কিছু কেন্দ্রের বাইরে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের জটলা দেখা গেলেও ভেতরে ভোটার খুব একটা ছিল না।
সকাল থেকে এমইএস স্কুল, ঘাট ফরহাদবেগ, হামজারবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কদম মোবারক উচ্চ বিদ্যালয়, সিডিএ স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ ১০ কেন্দ্রে ঘুরে ভোটার কম দেখা গেছে।
কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানা বিদ্যালয় কেন্দ্রে নারী ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৮০টি। সকাল ১০টা পর্যন্ত সেখানে ভোট গৃহীত হয় ৭৮টি। আরো দুটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল ১০ পর্যন্ত ভোট পড়েছে যথাক্রমে ১৮ এবং ১৯টি। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার বাড়তে পারে আশা করছেন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দু-একটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন আছেন।’
চসিক নির্বাচনে নগর ও জেলার হাটহাজারী উপজেলা মিলিয়ে ৭৩৫টি কেন্দ্র আছে। এসব কেন্দ্রে প্রায় নয় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেই সাথে ছিলো ২৫ প্লাটুন বিজিবি।