পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০১ পিএম, ২৬ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৭:২৬ পিএম, ৪ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
পতিত স্বৈরাচার পেছন থেকে আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ‘তারেক রহমান: পলিটিক্স এন্ড পলিসিস কনটেমপরারি বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থের এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ করেন। লেখক মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কের ‘উড ব্রিজ’। অনুষ্ঠানস্থলে গ্রন্থটি এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ৫৭১ পৃষ্ঠার গ্রন্থে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জীবন-কর্ম-রাজনীতির নানা দিক বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশের চারদিকের অবস্থা দেখে অনেকে একটু আতঙ্কিত হচ্ছেন, একটু উদ্বিগ্ন হচ্ছেন, এগুলো কি হচ্ছে? আসলে আপনাদের বুঝতে হবে, আমাদের সেই শত্রুরা যারা সামনে থেকে চলে গেছে, পেছনে থেকে তারা দেশকে আবার অস্থির করে তুলছে। এখানে আমাদের অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। দুর্ভাগ্য আমাদের, আমাদের দেশের মানুষেরা কেনো জানিনা সহনশীলতার অভাব হয়ে গেছে। একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। কারণ এই সরকার ব্যর্থ হলে অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাবে, বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবে, আমরা আবারো সেই অন্ধকারে চলে যাবো। সুতরাং এই বিষয়গুলো নিয়ে আমার মনে হয় আপনাদের পজেটিভ চিন্তা করা প্রয়োজন।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটা বিষয় অত্যন্ত জরুরি বলে আমি বলতে চাই, দুর্ভাগ্যক্রমে আজকে একটা ভয়াবহ কাজ শুরু হয়েছে, যেটা হচ্ছে, সংবাদপত্রের ওপর আঘাত, স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে আঘাত। যার জন্য আমরা সব সময় সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে তিনি প্রথম সংবাদপত্রকে মুক্ত করেছিলেন। আপনারা এই বিষয়টাকে জোরে বলেন না কেনো যে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সবচেয়ে বেশি ভোগ করেছে খালেদা জিয়ার সময়ে, বিএনপির সময়ে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।
তিনি বলেন, আজকে যখন দেখছি, কিছু সংখ্যক হঠকারী, কিছু সংখ্যক উস্কানিদাতা বিভিন্নভাবে এই সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে বিঘ্নিত করবার চেষ্টা করছেন, ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন- যেটা কোনো মতেই সচেতন মানুষের, দেশপ্রেমিক মানুষের মেনে নেয়া উচিত নয়। আমি অনুরোধ জানাব, সংশ্লিষ্ট সকলকে যে, অনুগ্রহ করে এই ভয়াবহ আত্মহননের কাছ থেকে সরে আসুন এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য সহযোগিতা করুন।
ফখরুল বলেন, আজকে যেসমস্ত কোমলমতি বালকেরা, ছাত্ররা তারা যেসমস্ত কাজ করছে- তাদের এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে, এটা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এই সরকারের পক্ষে সব কিছু একসঙ্গে করে ফেলা সম্ভব নয়। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ও সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাংবাদিক শফিক রেহমান, চারু কলা ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, গবেষক মোবাশ্বর হোসেন, শরীফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুল হালিম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম আজাদ, বাসস পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, কূটনীতিক ও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।