পেশীশক্তি প্রদর্শন করে নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মরিয়া ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী-মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০২ এএম, ২৬ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০১ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতেও পেশীশক্তি প্রদর্শন করে নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়ার বাড়িতে যুবলীগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলা, নির্বাচনি প্রচারণায় বের হলে বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়াসহ তার শিশু সন্তানকে অপহরণের হুমকি দেয়া হয়েছে। চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে গত শুক্রবার বিকেলে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে সোনাকঠিয়ায় গণসংযোগ চলাকালে পুলিশ অতর্কিতে নৃশংস হামলা চালিয়ে হারুনুর রশীদসহ প্রায় অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে আহত করে। বরুড়া পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী জসিমউদ্দিনের প্রচার মাইক ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা।
গতকাল রবিবার রাতে এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ সন্ত্রাসী এবং পুলিশ বাহিনী কর্তৃক এসব ন্যক্কারজনক ও বর্বরোচিত ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে মাথা উঁচু করতে সাহস না পায় সেজন্য একচ্ছত্র ক্ষমতা দখলে রেখে বিরোধী দলমতকে নিশ্চিহ্ন করতে চায় বর্তমান সরকার। আর এজন্যই স্থানীয় নির্বাচনগুলোতেও পেশীশক্তি প্রদর্শন করে নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। আসন্ন ফেনী, চৌদ্দগ্রাম ও বরুড়া পৌরসভা নির্বাচনে সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশ বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রমাণ করে যে, সরকার কোনভাবেই পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে নিজেদের প্রার্থীকে পরাজিত করবে না।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশব্যাপী চলমান পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ গণসংযোগের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় ক্যাডারদের হামলার মাত্রা বর্তমানে আরও বেপরোয়া আকার ধারণ করেছে। ক্ষমতার দাপট এবং ক্ষমতালোভ আওয়ামী সরকারকে হিংস্রতার শেষ সীমানায় নিয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একদিকে দুর্নীতি-দুঃশাসন অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং দলীয় সন্ত্রাসীদের ওপর নির্ভর করে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও খুন, জখম চালিয়ে দেশব্যাপী ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। তবে সন্ত্রাসী কর্ম করে সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারবে না। আসন্ন ফেনী, চৌদ্দগ্রাম ও বরুড়া পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশের দ্বারা সংঘটিত বর্বরোচিত ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং অবিলম্বে সুষ্ঠু নির্বাচনি পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহবান জানাচ্ছি।
এদিকে অপর এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, গাজীপুর জেলাধীন শ্রীপুর উপজেলা ও শ্রীপুর পৌর বিএনপি’র উদ্যোগে দুই এলাকায় কর্মীসভার উদ্দেশ্যে নির্মিত দু’টি মঞ্চ গতরাতে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে অন্য দুই স্থানে কর্মীসভার আয়োজন করা হলেও পুলিশ বাধা দিয়ে কর্মীসভাগুলো পন্ড করে দেয়। পুলিশ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্তৃক এধরণের কাপুরুষোচিত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান মিড নাইট সরকারের আমলে দেশের সর্বত্র অন্যায় ও অবিচারের দোর্দন্ড প্রতাপ চলছে। দেশে আইন-কানুনের বালাই নেই বলেই সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর যেকোন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও বাধা দিয়ে তা পন্ড করা হচ্ছে। আসলে সরকারের পায়ের নীচের মাটি সরে গেছে বলেই ক্ষমতা হারানোর অজানা আতঙ্কে তারা বিরোধী দলের যেকোন কর্মসূচি দেখলেই আঁতকে উঠছে। তাই দলীয় সন্ত্রাসী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের ওপর চালানো হচ্ছে অবর্ণনীয় নিপীড়ণ-নির্যাতন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে-দেশে রাজনীতি করার অধিকার কেবল আওয়ামী লীগের, অন্যকোন দল বা মতের অনুসারীদের জন্য নয়। দুুর্বিনীত দু:শাসনের এক বিভিষিকাময় ভয়াল রুপ গোটা দেশকেই গ্রাস করে ফেলেছে। শ্রীপুর উপজেলা ও শ্রীপুর পৌর বিএনপি’র উদ্যোগে দুই এলাকায় কর্মীসভার উদ্দেশ্যে নির্মিত দু’টি মঞ্চ যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আওয়ামী ভয়াবহ দুঃশাসন থেকে পরিত্রাণ পেতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানাই।