ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস আগামীকাল দেশের গণতন্ত্র ও নাগরিকের অধিকার সুরক্ষায় গণ-অভ্যুত্থান দিবস প্রেরণার উৎস-বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৬ এএম, ২৪ জানুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৫৮ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ শনিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বাণীতে বলা হয়, ২৪ জানুয়ারি আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন।
ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে শিক্ষা ও স্বাধিকারের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৯ সালের এইদিনে তদানীন্তন পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গণ-আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে তা ব্যাপক গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হয়েছিল। পতন নিশ্চিত হয়েছিল সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের। আর এরই ধারাবাহিকতায় প্রশস্ত হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ। গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্যই ছিল স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন, বহুদলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম, বহুমত এবং চিন্তার চর্চা ও মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা ফিরে পাওয়া। আমাদের জাতীয় জীবনে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের তাৎপর্য অপরিসীম। এ দিবস আমাদের গণতন্ত্র ও স্বাধিকার অর্জনের চেতনাকে শাণিত করে এবং সকল অন্যায়, অবিচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে আজও অনুপ্রেরণা জোগায়। কারণ এখন আবারও একদলীয় স্বেচ্ছাচারী শাসন কায়েম করা হয়েছে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাক-ব্যক্তি ও চিন্তার স্বাধীনতা এখন গুম করে ফেলা হয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একতরফা মিডনাইট নির্বাচনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কায়দায় এক অভিনব ভোট করে ভোটারদের নিজের পছন্দমতো প্রতিনিধি বাছাই করার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
সুতরাং আজকের এই মহান দিনে আমি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাই।
ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৬৯ সালের এইদিনে ছাত্র-জনতার দৃঢ় ঐক্য দীর্ঘ আন্দোলনকে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ দিয়েছিল। ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল পশ্চিমা শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে রাজপথে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। দীর্ঘদিন ধরে এদেশের জনগণের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন ’৬৯-এর এদিনে গণঅভ্যুত্থানে পরিণতি লাভ করে। সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের এ সংগ্রাম ছিল বিশে^র সকল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা। ’৬৯-এ স্বৈরশাসনের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতা প্রাপ্তির প্রায় অর্ধশতাব্দী অতিক্রান্ত হলেও দেশীয় কর্তৃত্ববাদী বর্তমান স্বৈরাচার ঔপনিবেশিক প্রভুদের মতো দুঃশাসন চালাচ্ছে। বর্তমানে জনগণের নেই কোনো নাগরিক স্বাধীনতা, মানবিক মর্যাদা ও নির্ভয়ে কথা বলার অধিকার। দেশ এখন ঘোর দুর্দিন অতিক্রম করছে। আবারো দেশে ’৬৯-এর ন্যায় গণ-অভ্যুত্থানের পরিস্থিতি বিরাজমান। আমাদের আবারো অধিকারহারা বঞ্চিত জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে বেরিয়ে আসতে হবে। ভাঙতে হবে স্বৈরাচারের দুঃশাসনের শৃঙ্খল। দেশের গণতন্ত্র ও নাগরিকের মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় গণ-অভ্যুত্থান দিবস আমাদের প্রেরণার উৎস। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁদের রূহের মাগফিরাত কামনা করি।