‘নগরপিতা নয়, নগর সেবক হতে চাই’ বিএনপি প্রার্থীর ইশতেহার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১১ এএম, ২৪ জানুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৩০ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা: শাহাদাত হোসেন জলাবদ্ধতামুক্ত ও স্বাস্থ্যকর চট্টগ্রাম গড়াসহ ৯টি খাতে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে ‘নগরপিতা নয়, নগর সেবক হতে চাই’ শীর্ষক নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
শনিবার দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তার প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে- জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম, স্বাস্থ্যকর চট্টগ্রাম, শিক্ষাবান্ধব চট্টগ্রাম, পরিচ্ছন্ন চট্টগ্রাম, নিরাপদ চট্টগ্রাম, সাম্য-সম্প্রীতির চট্টগ্রাম, নান্দনিক পর্যটন নগরী ও তথ্য-প্রযুক্তিখাতের উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতিসহ গৃহ কর ও আবাসন খাত নিয়ে নানা প্রস্তাবনা।
তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনই পারে বিদ্যমান উন্নয়ন অংশীদার প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সমন্বয় সাধন করে নগরবাসীর দোরগোড়ায় উন্নয়ন পৌঁছে দিতে। নির্বাচিত হলে আমি আপনাদের সাথে নিয়ে এ প্রচেষ্টায় সফল হবো ইনশাআল্লাহ।’
সাম্য-সম্প্রীতির চট্টগ্রাম গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডা: শাহাদাত বলেন, ‘চট্টগ্রামের হাজার বছরের ঐতিহ্যের আলোকে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় সহনশীলতা ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনে আবদ্ধ করার প্রয়াস থাকবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে মাদকাসক্তির ঝুঁকি কমাতে সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, কবরস্থান, শ্মশান ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।’
নান্দনিক পর্যটন নগর গড়তে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নগরীকে অল্প সময়ে বিশ্বের অন্যতম নগরীতে পরিণত করার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পাহাড়, নদী, সমুদ্র, বিরল প্রকৃতির সৌন্দর্যের আলোকে পর্যটন শিল্পের বিকাশ সাধন করে আধুনিক আকর্ষণীয় পর্যটন নগর গড়ে তোলা হবে। নগরবাসীর সুবিধা নিশ্চিত করে পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বিদেশী পর্যটন আকর্ষণের নিমিত্তে দেশী-বিদেশী সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘নাগরিকদের যাতাযাত সুবিধার জন্য পরিকল্পিত স্মার্ট নগরীর সৌন্দর্য রক্ষা করে আয়বর্ধক প্রকল্প বৃদ্ধিসহ বাস স্টপ নির্মাণ করা হবে। বন্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহ চালু ও লাভজনক করার উদ্যোগ নেয়া হবে। বায়ু দূষণ রোধে ইলেকট্রিক বাস সার্ভিস চালু করা হবে। নগরীতে অবস্থিত দীঘি ও লেকসমূহকে পর্যটন স্পটে পরিণত করা হবে। এছাড়া নগরবাসীর জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত পার্ক নির্মাণ করা হবে।’
স্বাস্থ্যকর চট্টগ্রাম গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডা: শাহাদাত বলেন, ‘করপোরেশন এলাকায় অবহেলিত বিভাগগুলোর মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্য বিভাগ। নগরের জনসংখ্যা গত ৫০ বছরে প্রায় ২০ গুণ বৃদ্ধি পেলেও নতুন কোনো হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় শয্যা সংখ্যার অপ্রতুলতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় ১০টি বিশেষায়িত হাসপাতাল থাকলেও চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত নেই। চট্টপ্রামে প্রতিষ্ঠিত বন্দরনগরীর স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বৃদ্ধিকল্পে অন্তত আরো ২ হাজার শয্যার পর্যাপ্ত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। সাথে সাথে শিশু হাসপাতাল, মাতৃসদন ও ট্রমা সেন্টারসহ বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হবে।’
শিক্ষাবান্ধব চট্টগ্রাম গড়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় এনে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার মান উন্নয়নে, স্কুলে প্রবেশ, প্রস্থান, ক্লাস কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও পরীক্ষার ফলাফল সবকিছু যাতে অভিভাবকরা ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে মনিটরিং করতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
গৃহকর ও আবাসন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়ে ডা: শাহাদাত বলেন, ‘চসিক একটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। সেবা প্রদানে কর প্রয়োজনীয় সহায়ক শক্তি। জনগণের উন্নত সেবা নিশ্চিতকরণে বর্তমান গৃহকরের প্রয়োজনীয় বিন্যাস ও সরলীকরণ করাসহ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিম্ন আয়ের নগরবাসী, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের আবাসন গৃহ করমুক্ত করা হবে। হিজরা, ভবঘুরে ও ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করা হবে। শ্রমজীবীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কিস্তিতে আবাসন সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হবে।’