ক্ষমতাসীনরা ইতিহাস গিলে খাচ্ছে-মান্না

ক্ষমতাসীনরা ইতিহাসকে গিলে খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। 

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক শহীদ আসাদ স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। শহীদ আসাদ ফাউন্ডেশন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।  

মান্না বলেন, যারা ক্ষমতায় আছে, তারা আসাদকে স্মরণ তো করবেই না উল্টো ইতিহাসকে গিলে খাচ্ছে। সমস্ত কিছু একজন করেছেন, আর কেউ নেই। সমস্ত কৃতিত্ব, সমস্ত প্রশংসা একজনের প্রাপ্য, আর কেউ পেতে পারে না। আসাদ বাংলাদেশের মানুষের কাছে এখন আর ওইরকম ‘আইকন’ নেই। 

তিনি বলেন, ইতিহাস এমন যে কোনও না কোনোভাবে মানুষের কাছে আলো ছড়ায়। চেষ্টা করলে কোনও শাসক সেটা বদলে দিতে পারে না। ইচ্ছা করলেই ইতিহাস বানানো যায় না, ইতিহাসের কান টেনে লম্বা করা যায় না। ইতিহাসকে যেমন খুশি তেমন রং তুলি দিয়ে আঁকতে পারেন না।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, আইয়ুব খান তো স্বৈরশাসক ছিলেন, জবরদস্তি করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। ১০ বছর ছলে-বলে ও কৌশলে ক্ষমতায় ছিলেন। আইয়ুব খানকে সবাই মনে করছিল আয়রনম্যান। ওনাকে কেউ সরাতে পারবেন না। অথচ আইয়ুব খানকে চলে যেতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আইয়ুব খানের পুলিশ যখন গুলি করত, তখন তারা একটা লাল ফিতা দিয়ে রাখত। লাল ফিতা পার হলে গুলি করা হত। এখন গলির মধ্য দিয়ে বের হওয়ার সাথে সাথে গুলি করে দেয়া হয়। এখন মানুষের জীবন কচু পাতার পানির মতো। ওরা যদি মনে করে কাউকে মেরে ফেলবে। রাস্তায় নামার পর তুলে নিয়ে গেলে কিছু করা যাবে না। এখন যা হয়েছে, এতটাও খারাপ সময় তখনও (পাকিস্তান আমলে) ছিল না। 

মান্না বলেন, আমরা শেখ মুজিবের ৬ দফায় নৌকায় ভোট দিয়েছিলাম। জিতেছিলাম, আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার কথা। তারা (পাকিস্তানি শাসক) মানে নাই, আমরা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করেছিলাম। সেই যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলাম। আর এখন ভোট নাই। রাতের বেলায় ভোট ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এরা ভোট ডাকাতি করে। এরাতো ডাকাত, ভোট ডাকাত। ক্ষমতায় যারা আছে, তাদের ক্ষমতায় থাকার কথা নয়। ওরা আসাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে না, মতিউর রহমান মল্লিকের নাম স্মরণ করবে না। 

তিনি আরও বলেন, তারা ১১ দফার কথা স্মরণ করবে না। কারণ সেই দিনের কথা মনে করে মানুষ যদি আবার রাস্তায় নামে। তাদের সব স্মৃতি মুছে দাও, সব ধারালো চেতনা ভোঁতা করে দাও। এই কাজগুলো করার মধ্য দিয়ে তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করছে। 

তিনি বলেন, আসাদের থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। সব ধরনের অন্যায়ের বিরোধিতা করতে হবে। আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।