আ'লীগ কখনও প্রকৃত নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারেনি : শাহজাহান ওমর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৩২ পিএম, ১৪ মে,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:১৭ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মোঃ শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম) বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনও প্রকৃত নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারেনি। ৭৩ সালে তারা একদলীয় নির্বাচন করেছে। এর পরে তারা প্রতিবার হেরেছে। ৯৬ সালে মখা আলমগীরের নেতৃত্বে জনতার মঞ্চ করে সামান্য কয়টা ভোটে তিনি জিতেছিলেন। ২০০১ সালে তিনি আরও খারাপ ভাবে হেরেছিল। এক এগারোর সরকারের সময় হাসিনা বলেছিল আমাকে সাহায্য করলে বৈধতা দেব। পরে তারা কারচুপি করে হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। তার পরের ঘটনা আপনারা সবাই জানেন।
আজ শনিবার (১৪ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দেশব্যাপী আওয়ামী সন্ত্রাস নৈরাজ্য ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপির আয়োজিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
জেলা বিএরপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুল ইসলাম রবির সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ টিপুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন খান, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু।
তিনি বলেন, আপনাদের ব্যানারে লেখা প্রতিবাদ। হাসিনা কি প্রতিবাদ বোঝে? সে বোঝে না। সে শুধু বোঝে মুগুরবাদ। এ হল বক্তব্যের সারমর্ম। প্রতিবাদ করে লাভ নেই। সুন্দর কথা হাসিনা বোঝে না। প্রতিরোধ করতে হবে প্রয়োজনে মুগুরবাদও দিতে হবে।
ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমর বলেন, হাসিনা নির্বাচন দিতে ভয় পায়। সুষ্ঠু নির্বাচন দূরের কথা সে অসুষ্ঠু নির্বাচনও দেবে না। এভাবে আর নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। বেহুদা কমিশনের মত নির্বাচন কমিশন দিয়ে আর নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। যে কোন মূল্যে তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আগামীতে আমরা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে অবশ্যই আমরা নারায়ণগঞ্জের পাঁচটা সিট আপনারা বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে সক্ষম হবেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পরিবারে ৪১ জন সংসদ সদস্য। শ্রীলংকার দিকে তাকান। সেখানে এমপি মন্ত্রীদের ধরে মানুষ মুগুরবাদ দিচ্ছে। শেখ হাসিনার চার গুন আর তা হলো হামলা, মামলা, গুম, খুন। সাত খুন কোথায় হয়েছিল, এই নারায়ণগঞ্জে। আপনারা যদি জাগতে পারেন তাহলে তারা পালাবে। হঠাৎ আওয়ামী লীগের কিছু নেতার শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। তারা শেখ হাসিনার আত্মীয়। এরকম বিভিন্ন জেলায় তারা লুটপাট করছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, শেখ হাসিনা, আপনার দল অবৈধভাবে টাকা পাচার করে। বিভিন্ন দেশে তারা টাকা পাচার করে। তিনি নিজের দলকে কন্ট্রোল করতে পারেন না। আওয়ামী লীগ নিজেই নিজের সবচেয়ে বড় শক্র আপনার ছেলে জয়ের বেতন দুই লক্ষ ডলার। এ টাকা কোথা থেকে আসে। একদিন কি তাকে প্রশ্ন করবে না। তিনি আমেরিকা বসে কি এমন কাজ করছে যে তকে এত টাকা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের অবস্থা শ্রীলংকার চেয়েও খারাপ হবে। আপনি এ দেশকে কি দিয়েছেন। মেধাবী ছাত্ররা চাকরি পায় না। যারা আওয়ামী লীগ করে তারা পুলিশ, বিসিএস ক্যাডার হয়ে যায়। আপনার দল যদি এত শক্তিশালী হয় তাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। তাতে যদি জিতে আসেন আমরা সবাই দাঁড়িয়ে আপনাকে স্যালুট জানাবো।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আজকে দেশে কোন নির্বাচন নেই। একদলীয় শাসন চলছে দেশে। এজন্য স্বাধীনতা নেয়া হয়নি, মুক্তিযুদ্ধ করা হয়নি। আজকে দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এভাবে দেশ চলতে পারে না। আজ আমাদের নেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে কারণ তিনি বাইরে থাকলে শেখ হাসিনা অবৈধভাবে নির্বাচন করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, হাসান মাহমুদ পাকিস্তানের দিকে তাকান, শ্রীলংকার দিকে তাকান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলতে চাই আপনারা জনগণের পাহারাদার, আওয়ামী লীগের পাহারাদার হবেন না। এর জবাবও আপনাদের একদিন দিতে হবে। আমাদের অনেক জায়গায় ইফতার মাহফিল করতে দেয়নি। আমাদের সিনিয়র নেতা মোশাররফ হোসেনের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমি বলতে চাই এদের শেষ সময় তারা অনেক কিছুই বলবে। আসুন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সরকারকে প্রতিহত করি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, যুগ্ম আহবায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, আহবায়ক সদস্য মাসুকুল ইসলাম রাজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা যুবদলের আহবায়ক গোলাম ফারুক খোকন, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ।