আইনের শাসন নয়, চলছে আওয়ামী দুঃশাসন : এমরান সালেহ প্রিন্স
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৭ পিএম, ১৪ মে,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:১০ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
আইনের শাসন নয়, চলছে আওয়ামী দুঃশাসন উল্লেখ করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, সন্ত্রাসী, দূর্ণীতিবাজ, চাঁদাবাজদের জামিন হয়, দন্ডিতদের বিদেশে যেতে দেয়া হয়, অথচ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় জনগণের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন না দিয়ে সুচিকিৎসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। আওয়ামী লীগ সাত খুন করলেও মাপ, বিরোধী নেতাকর্মীরা কবরে বা প্রবাসে থাকলেও রক্ষা নাই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতার টিকে থাকার স্বার্থে রাষ্ট্রের সকল স্তম্ভকে তছনছ করে ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
গতকাল শুক্রবার (১৩ মে) বিকেলে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার কায়েম করতে হবে। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে অতীতে কোনও নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু হয় নাই, ভবিষ্যতেও হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন নিয়ে যতই আশ্বাস দিক না কেন, তাদেরকে কেউ আর বিশ্বাস করে না। তারা বার বার জনগণকে প্রতারিত করেছে, নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের অধীনে বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে যাবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, প্রতিরক্ষা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর অবৈধ হস্তক্ষেপ ও অপব্যাবহার করে তারা কি ভাবে নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রহসন করেছে জনগণ তা নিজের চোখে দেখেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি নিজেদের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের ষড়যন্ত্র থেকে সরে না আসে তাহলে তাদেরকে কঠিন গণ অভ্যূত্থানের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি পাড়া, মহল্লায়, গ্রাম, শহরে আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান।
বাজিতপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক, সাবেক মেয়র এহসান কুফিয়ার সভাপতিত্বে বাজিতপুর পৌর শহরের আলিয়াবাদ থানা মোড়ে তার বাসভবন সংলগ্ন চত্বরে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলন উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এড.শাহ্ ওয়ারেস আলী মামুন। বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ মজিবর রহমান ইকবাল, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া, নাজমুল আলম, বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মনির।
জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে নেতৃবৃন্দ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সম্মেলনে বাজিতপুর পৌর বিএনপির সভাপতি পদে কাউন্সিলরদের গোপন ব্যালটে এহসান কুফিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জসিম উদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
উল্লেখ্য, বাজিতপুর পৌর ঈদগাহ মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকলেও পুলিশ গতকাল সম্মেলনের জন্য নির্মানাধীন প্যান্ডেল ভেঙ্গে ফেলে এবং ঈদগাহ মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেয়। বাধ্য হয়েই পৌর বিএনপির আহ্বায়কের বাসভবন চত্বরে সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তার বক্তব্যে ঈদগাহ মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠানে পুলিশের বাধার তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, অথচ সরকারের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলছেন, বিরোধী দলের কর্মসূচি পালনে কোনও বাধা নাই। বাজিতপুরে সম্মেলনে প্রতিবন্ধকতা প্রমান করে এসব বক্তব্য ভাওতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা মুখে যা বলে, তার উল্টোটা করে।
সম্মেলনে বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম বলেন, জনগণের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র কেড়ে নিয়ে, গুম, হত্যাসহ দমন নিপিড়ন চালিয়ে সরকার মহা অন্যায় করেছে, অথচ মন্ত্রীরা তা কথার মারপ্যাচে আড়াল করার অপচেষ্টা করছে। সরকারের ব্যার্থতায় সয়াবিন তেল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে জনগণের সমস্যার সমাধান হবে না।
বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন বলেন, বিএনপি দর-কষাকষি নয়, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় কথা বলছে। আওয়ামী নেতারা বলছেন অন্যান্য দেশের মত নির্বাচন হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, পৃথিবীর কোন দেশে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট কেটে প্রহসন করা হয়? তিনি বলেন, এই সরকারের ওপর কারোরই নুন্যতম আস্থা নাই।